Advertisement
১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বর্ষাবে তিতলি, পথ চেয়ে চাষি

জেলার বেশির ভাগ চাষি আমন মরসুমে লালস্বর্ণ ধান চাষ করেন। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়।

শুকিয়েছে কালনার এক আনাজ খেত। নিজস্ব চিত্র

শুকিয়েছে কালনার এক আনাজ খেত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৫
Share: Save:

বৃষ্টির অভাবে ধানের জমিতে ফাটল দেখা শুরু হয়েছে। শুকোতে বসেছে আনাজ। এই পরিস্থিতিতে পুজোর মুখে জেলার চাষিদের আশার আলো দেখিয়েছিল ‘তিতলি’। কিন্তু, বৃহস্পতিবার আকাশ মেঘাছন্ন থাকলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির দেখা না মেলায় চিন্তায় চাষিরা।

জেলার বেশির ভাগ চাষি আমন মরসুমে লালস্বর্ণ ধান চাষ করেন। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। যা থেকে ১৬ লক্ষ টনেরও বেশি ধান উৎপাদন হয়। এখন দীর্ঘমেয়াদি ধানের বয়স ৭০-৮০ দিন। কৃষি বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই সময় ধান গাছে প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। অথচ, মাস দেড়েক ধরে তেমন বৃষ্টির দেখা নেই। বাধ্য হয়ে কালনা, পূর্বস্থলী, মন্তেশ্বর, মেমারি, রায়না, জামালপুর, আউশগ্রাম, গুসকরার মতো এলাকায় চাষিরা গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে মাটির তলার জল তুলে ব্যবহার করছেন। বেশ কিছু এলাকায় জলের অভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে নদী সেচ প্রকল্প। গ্রামাঞ্চলে পুকুর, খালবিলেও দেখা দিয়েছে জলসঙ্কট।

মন্তেশ্বর, আউশগ্রামের মতো ব্লকগুলিতে চাষিদের দাবি, ধান বাঁচাতে বাড়তি খরচ করে ব্যক্তি মালিকানাধীন শ্যালো পাম্পের জল কিনতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় বাদামি শোষক পোকা, খোলা পচা এবং ঝলসার হামলা শুরু হয়েছে কিছু জমিতে। এক দিকে পোকার হামলা, অন্য দিকে ধান গাছ বাঁচাতে জল কেনা— দুইয়ের জেরে বাড়ছে চাষের খরচ। প্রতিদিন চাষের জন্য প্রচুর জল তুলে নেওয়ায় জলস্তর নামতে শুরু করেছে। এ ভাবে চলতে থাকলে বোরো মরসুমের ধান চাষ নিয়ে চিন্তিত কৃষিকর্তারা। শুধু ধান নয়, বৃষ্টির অভাবে পুজোর মুখে আনাজ চাষিরাও পড়েছেন মুশকিলে।

কালনার চাষি বিমল কর বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বৃষ্টির অভাবে ধানজমিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। আশা ছিল, তিতলি ভাল বৃষ্টি আনবে। ঝিরঝিরে বৃষ্টি হলেও মাটি ভেজেনি। তাই ধান নিয়ে চিন্তা যাচ্ছে না।’’ বালিন্দর গ্রামের অজিত মালিক বলেন, ‘‘পুজোর মুখে ভাল বৃষ্টি হলে অনেক আনাজের ভাল ফলন মিলত। বুধবার থেকে আকাশে মেঘ দেখে আশা জাগছিল। কিন্তু এখনও তো তেমন বৃষ্টির দেখা নেই!’’

জেলার এক সহ-কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এখন ধানের জমিতে প্রচুর জল প্রয়োজন। জল না মিললে ধানের শিষ পুষ্ট হবে না।’’ তাঁর দাবি, ভারী বৃষ্টি হলে বাদামি শোষক পোকার প্রাদুর্ভাবও কমবে।

তিতলির প্রভাবে আকাশে মেঘ ঘন হয়েছে। তা ভারী বৃষ্টি হয়ে নেমে আসে কি না, সে দিকেই এখন চোখ চাষিদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Farmer Cyclone titli Crop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy