E-Paper

নদীর অনুকূল পরিবেশে বাড়ছে কুমির

সেটি উদ্ধার করে বনকর্মীরা ছেড়ে দেন ফরাক্কা এলাকায়। এখনও পর্যন্ত বেশির ভাগ কুমিরেরই দেখা মিলেছে পূর্বস্থলী থেকে নদিয়ার শান্তিপুরের মধ্যে।

কালনা শহরে ঢুকে পড়া কুমির।

কালনা শহরে ঢুকে পড়া কুমির। —ফাইল চিত্র।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ০৮:২৫
Share
Save

কখনও পূর্ণবয়স্ক। আবার কখনও মাঝবয়সি। ভাগীরথীর বিভিন্ন জায়গায় ধারাবাহিক ভাবে দেখা মিলছে কুমিরের। নদী থেকে উঠে তারা ঢুকে পড়ছে লোকালয়েও। বন দফতর জানিয়েছে, কয়েক বছর ধরে কুমিরের পাশাপাশি ভাগীরথীতে দেখা মিলছে ডলফিন এবং ঘড়িয়ালেরও।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ থেকে ভাগীরথী এবং তার পাড় ঘেঁষা বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে কুমির। এখনও পর্যন্ত অন্তত সাত বার কুমিরের দেখা মিলেছে। কালনা এবং কাটোয়ায় একটি করে কুমির বন দফতর উদ্ধার করেছে। সম্প্রতি কালনা খেয়াঘাটে দেখা যায় প্রায় সাত ফুট লম্বা একটি কুমির। সেটি স্রোতের অনুকূলে নদিয়ার শান্তিপুর এলাকার দিকে এগিয়ে যায়। কিছু দিন আগে নদিয়ার নবদ্বীপেও ভাগীরথীতে দেখা মেলে একটি কুমিরের। মাঝেমধ্যে নদীর চরে, পাটখেতের পাশে রোদ পোহাতে দেখা যাচ্ছে একটি কুমিরকে। শব্দ পেলেই নেমে পড়ছে জলে। ২০২৩-র ১০ অক্টোবর কালনা শহরের পালপাড়া এলাকায় গভীর রাতে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে একটি পূর্ণবয়স্ক কুমির। সেটি উদ্ধার করে বনকর্মীরা ছেড়ে দেন ফরাক্কা এলাকায়। এখনও পর্যন্ত বেশির ভাগ কুমিরেরই দেখা মিলেছে পূর্বস্থলী থেকে নদিয়ার শান্তিপুরের মধ্যে।

কেন এই এলাকায় বেশি দেখা যাচ্ছে কুমির? বন দফতরের কাটোয়ার রেঞ্জ আধিকারিক শিবপ্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘ভাগীরথী নদীর যে অংশে বেশি কুমির দেখা যাচ্ছে, সেই অংশে বেশ কিছু চর রয়েছে। এক টানা সাঁতার কাটার পরে রোদ পোহাতে ওই সব চরে কুুমিরগুলি আশ্রয় নিচ্ছে।’’ তিনি জানান, ধারাবাহিক ভাবে কুমিরের দেখা মিলছে। মিষ্টি জলে মগর প্রজাতির কুমির সাধারণত খুব বেশি আক্রমণাত্মক হয় না। মাছ-সহ বিভিন্ন প্রাণী শিকার করে। মাঝেমধ্যে পাড়ে উঠে হাঁস, মুরগি, ছাগল টেনে নিয়ে যেতে পারে। হামলা চালাতে পারে শিশুদের উপরে। তাই কুমির দেখা গেলে বন দফতর যেমন নজরদারি চালাবে, তেমনই মানুষকেও সতর্ক থাকতে হবে।’’

বনকর্মীদের অনুমান, ফরাক্কা থেকে আসছে কুমির। হয় সেখানে বসবাসে সমস্যা বাড়ছে, না হয় খাবার-সহ বসবাসের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে কালনা-নবদ্বীপ এলাকায়। কালনার মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল বলেন, ‘‘কুমির যে এলাকায় থাকছে সেখানে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে, যাতে স্থানীয় মানুষের ক্ষতি না হয়।’’ কালনা শহরের বাসিন্দা সম্পদ মণ্ডল জানিয়েছেন, অতীতে যে ভাগীরথীতে নদীতে কুমির দেখা যায়নি তা নয়। তবে নিয়ম করে প্রতি বছর একাধিক কুমির দেখতে পাওয়ার ঘটনা ঘটছে গত বছর পাঁচেক ধরে।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাগীরথীতে বেড়েছে ডলফিন এবং ঘড়িয়ালের সংখ্যাও। তবে বেশি ডলফিনের দেখা মিলছে কেতুগ্রামের কল্যাণপুর থেকে শাঁখাই ঘাট পর্যন্ত এলাকায়। বিশেষজ্ঞদের মত, ভাগীরথী এবং অজয়ের মোহনায় খাবার হিসেবে মাছ পেতে তাদের অসুবিধা হচ্ছে না। এরই পাশাপাশি, একটি নির্দিষ্ট এলাকা জুড়ে ডলফিনের দেহ ভেসে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি কাটোয়া শ্মশানঘাটের অদূরে ভাসতে দেখা যায় ডলফিনের দেহ। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পাঁচ বছরে কাটোয়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ন’টি ডলফিনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। সেগুলির ময়না তদন্ত হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, মৃত ডলফিনের মুখে আটকে রয়েছে জাল। এলাকাবাসীর দাবি, বহু ক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদের জালে জড়িয়ে মৃত্যু হচ্ছে ডলফিনের।

বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ডলফিন এবং ঘড়িয়াল বেড়েছে। এদের বাঁচাতে গেলে জাল পেতে মাছ ধরা ও এবং নদীদূষণ রুখতে হবে। চোরা শিকারিদের আটকাতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kalna Crocodile

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।