কাটোয়ার একটি মণ্ডপ দাউদাউ করে জ্বলছে। দমকলও চলে এসেছে। কিন্তু রাস্তার ধারে আলোর গেট থাকায় দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারেনি। আলোর গেট সরিয়ে দমকল যখন পৌঁছল, ততক্ষণে মণ্ডপ পুড়ে ছাই। সোমবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে গত বছরের এই অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন দমকলের এক কর্তা। তাঁর অনুরোধ, “দমকলের গাড়ি যাতে ঢুকতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখবেন।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো কমিটিগুলিকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। গত বছর থেকেই পুরসভাও মণ্ডপ তৈরির অনুমোদনের জন্য টাকা নিচ্ছে না। এ বার দমকলের তরফেও জানানো হল, বর্ধমান শহরে পুজোর অনুমতির জন্য কোনও টাকা দিতে হবে না উদ্যোক্তাদের। তবে মণ্ডপের সামনে মেলা বা অনুষ্ঠান করতে হলে সরকারের নির্ধারিত ফি দিতে হবে।
বিদ্যুৎ দফতরও জানিয়েছে, মোট বিলের ২৩ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সরকার। অতএব সুরক্ষা রেখে নির্বিঘ্নে বিদ্যুৎ ব্যবহার করুন পুজো উদ্যোক্তারা। এত দিন শহরের শতাধিক পুজো উদ্যোক্তারা বিসর্জনের সময় কোনও লিখিত অনুমতি নিতেন না। শোভাযাত্রা বড় হলে থানায় মৌখিক ভাবে জানিয়ে রাখতেন। এ বছর থেকে বিসর্জনের জন্য পুলিশের কাছ থেকে আলাদা করে অনুমতি নিতে হবে বলে বৈঠকে জানান জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, “শোভাযাত্রায় কত মানুষ যোগ দেবেন, কী কী থাকবে তার বিস্তারিত দিয়ে উদ্যোক্তাদের অনুমোদন নিতে হবে। উদ্যোক্তাদেরও প্রচুর স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেখতে হবে।’’ গত বছর পুজো উদ্যোক্তারা মণ্ডপের সামনে ও ভিতরে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন। এ বারও তা থাকবে।
এ দিন বিকেলে ওই বৈঠকে ক্লাব কর্তারা শহরে ভাঙাচোরা রাস্তা, নির্মীয়মাণ নর্দমার জন্য মণ্ডপ তৈরিতে বাধা পড়ছে বলে অভিযোগ করেন। অনেকেই জানান, জিটি রোড অন্ধকার থাকায় দর্শনার্থীদের অসুবিধা হয়। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেন, “পুজোর আগে সমস্যা মিটে যাবে।’’ জোর করে চাঁদা আদায়, নিয়ম ভেঙে মাইক বাজলে বা অনুমতি ছাড়া পুজো করলে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ছাড়াও এ বার পরিবেশ দফতর পৃথক পুরস্কার দেবে উদ্যোক্তাদের। পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “শহরের মানুষ যাতে পুজোর সময় নিরবিচ্ছিন্ন আলো পান, তার জন্য পুরসভা সব রকমের ব্যবস্থা নেবে।’’