Advertisement
E-Paper

নেই উড়ালপুল, শহর আটকে লেভেলক্রসিংয়ে

প্রাচীন জনপদ পাণ্ডবেশ্বরে নানা পুরনো সমস্যা নিয়ে বাস মানুষের। রাস্তা, নিকাশি থেকে জল সব ধরনের পরিষেবা নিয়েই ব্যতিব্যস্ত এই এলাকার বাসিন্দারা। পাণ্ডবেশ্বরে পঞ্চায়েত গঠন হয়েছে তিন দশক আগে। পঞ্চায়েত ও উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম বৈদ্যনাথপুরের নামে হলেও ব্লক, থানা, কলেজ থেকে বিধানসভা কেন্দ্র সবই পাণ্ডবেশ্বরের নামে।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৬
নিত্য যানজট এই লেভেল ক্রসিংয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

নিত্য যানজট এই লেভেল ক্রসিংয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রাচীন জনপদ পাণ্ডবেশ্বরে নানা পুরনো সমস্যা নিয়ে বাস মানুষের। রাস্তা, নিকাশি থেকে জল সব ধরনের পরিষেবা নিয়েই ব্যতিব্যস্ত এই এলাকার বাসিন্দারা।

পাণ্ডবেশ্বরে পঞ্চায়েত গঠন হয়েছে তিন দশক আগে। পঞ্চায়েত ও উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম বৈদ্যনাথপুরের নামে হলেও ব্লক, থানা, কলেজ থেকে বিধানসভা কেন্দ্র সবই পাণ্ডবেশ্বরের নামে। এই খনিশহরে উন্নত যোগাযোগের জন্য উড়ালপুল, গরমে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ বা বাসস্টপে দাঁড়ানোর জন্য ছাউনি কিছুই মেলে না বলে অভিযোগ।

শীত পড়তেই কুয়োর জল শুকোতে শুরু করে। গরমে তা একদম তলানিতে গিয়ে ঠেকে। বিকল্প ব্যবস্থার অভাবে চরম সমস্যায় পড়তে হয় মানুষকে। গোঁসাইপাড়া, গিরিপাড়া, স্টেশনপাড়া, ডিভিসি পাড়ায় জল সঙ্কট সব চেয়ে বেশি হয়। প্রায়ই কলে জল মেলে না। পাণ্ডবেশ্বর বনিক সংগঠনের সম্পাদক শ্যামাপদ ভট্টাচার্য জানান, খাবার দোকানের মালিকদের সারা বছরই জল কিনতে হয়। গরমে পাঁচ টাকায় দু’টিন দরে জল কিনে সমস্যা মেটাতে হয় বাসিন্দাদের। কিছু বাড়িতে জলের সংযোগ দিয়ে সরবরাহের উদ্যোগ হলেও তা কার্যত চালু করা যায়নি। বাসিন্দাদের দাবি, এই প্রকল্প চালু হলে সমস্যা অনেকটা মিটবে।

বাসিন্দাদের একাংশের মতে, পাণ্ডবেশ্বর জনপদ বেড়েছে উপযুক্ত কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই। যার জেরে সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তার পরে যে সব নর্দমা রয়েছে, সেগুলিও আবার ঠিক মতো সাফাই হয় না। আবর্জনা জমে থাকায় এলাকায় মশা-মাছির উপদ্রব হয়। রাস্তার একাংশ আবার হকারদের দখলে। প্রধান বাসস্ট্যান্ড রয়েছে পাণ্ডবেশ্বর স্টেশন চত্বরে। সেখানে যাত্রীদের জন্য কোনও প্রতীক্ষালয় নেই। পাণ্ডবেশ্বর মোড় ও ফুলবাগান মোড়ে রাস্তার এক পাশে একটি করে প্রতীক্ষালয় থাকলেও সেগুলি জীর্ণ। তা দখল করেছে হকারেরা। ফুলবাগানে শৌচাগার থাকলেও তা ব্যবহারের অযোগ্য। অন্য কোথাও আবার শৌচাগারই নেই।

একই রকম হাল এলাকার নানা রাস্তার। পাণ্ডবেশ্বর থেকে গৌরবাজার যাওয়ার রাস্তা ভাঙাচোরা। পাণ্ডবেশ্বর থেকে ইছাপুর হয়ে দুর্গাপুর যাওয়ার রাস্তা সংকীর্ণ। যানবাহন চলাচল বাড়লেও রাস্তা চওড়া করা হয়নি। দুর্গাপুর যাওয়ার পথে সরপি থেকে মাধাইগঞ্জ রাস্তারও অবস্থা বেশ খারাপ। আসানসোল মহকুমা মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়াকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া, আসানসোল মিনিবাস মালিকদের সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ রায়েরা জানান, গৌড়বাজার, দুর্গাপুর তথা বর্ধমান যাওয়ার প্রধান রাস্তায় পাণ্ডবেশ্বর স্টেশনের অদূরে লেভেলক্রসিংয়ে উড়ালপুল নেই। এর জেরে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। এই রেলপথ দিয়ে প্রচুর ট্রেন যাতায়াত করে। তার সঙ্গে রয়েছে কয়লা বোঝাই মালগাড়ির চলাচল। তার জেরে ওই লেভেলক্রসিংয়ের কাছে আটকে থেকে নিয়মিত নাকাল হতে হয় বড় অংশের নিত্যযাত্রীদের। দীর্ঘ দিন বাসমালিক ও কর্মী সংগঠনগুলি এখানে উড়ালপুলের দাবি জানিয়ে আসছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর ধরে বাজার এলাকা অপরিষ্কার হয়ে থাকছে। এতে দূষণের সমস্যা বাড়ছে। বাজার কমিটির সম্পাদক শ্যামাপদবাবু অভিযোগ করেন, “সংশ্লিষ্ট নানা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। এই সমস্যা সমাধানের বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে আমাদের কমিটি।” শ্মশান নিয়েও ক্ষোভের অন্ত নেই। সেখানে জমি দখল করে একের পর এক নির্মাণ হওয়ায় সৎকার করতে এসে জায়গা পেতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয় বলে শহরবাসীর অভিযোগ। এ সবের সঙ্গে জনপদ সমস্যায় পড়ছে অজয়ের বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে।

(চলবে)

level crossing pandaveswar flyover nilotpol rouchawdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy