স্কুলের পরিচালন সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন তোলা আটকাতে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর নেতার বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে দলেরই অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুরের এমএএমসি এলাকায়। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে।
এমএএমসি এলাকায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অনুমোদিত ওই বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় ২৬০০। গত তিন বছর পরিচালন সমিতি তৃণমূলের দখলে রয়েছে। এই বছর আবার নির্বাচন হবে। আজ, সোমবার মনোনয়ন তোলার দিন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন আগেই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কাজকর্মে অসন্তোষ প্রকাশ করে তৃণমূলের অন্য একটি গোষ্ঠী স্কুলভোটে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়ে দেয়। এর পরেই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর তরফে তৃণমূল নেতা শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পরিচালন সমিতির কাজকর্মের ফিরিস্তি দেন। অন্য গোষ্ঠীর তরফে আবার এলাকায় পাল্টা পোস্টার দিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়।
অভিযোগ, শনিবার রাতে ওই বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা তপন (টাম্পু) মজুমদারের এমএএমসি আবাসনে দু’টি বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। তপনবাবু থাকেন একতলায়। বোমা গিয়ে লাগে দোতলার জানালায়। কাচ এবং কাঠের কাঠামোর একাংশ ভেঙে যায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই আবাসনের প্রবীণ বাসিন্দা শান্তিরাম মুখোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী ঊষাদেবী। রবিবার তাঁরা পুলিশে অভিযোগ করেন।
তৃণমূল নেতা তপনবাবুর দাবি, ওই বোমার লক্ষ্য ছিলেন তিনিই। পুলিশের কাছে তিনি আলাদা অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্কুল ভবন নির্মাণ-সহ নানা কাজে দুর্নীতি হয়েছে। তার প্রতিবাদ করেছি। নির্বাচন থেকে যাতে আমরা সরে দাঁড়াই সে জন্য লাগাতার চাপ দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই আমার বাড়ি লক্ষ করে বোমা ছোড়া হয়েছে।’’ তবে কোনও ভাবেই ভোট থেকে সরে দাঁড়াবেন না বলে জানান তিনি। মোটরবাইকে চড়ে এসে দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায় বলে পুলিশকে জানান তিনি।
বর্তমান স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক কৌশিক বিশ্বাস অবশ্য অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, তাঁরা ক্ষমতায় আসার পরে স্কুলে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তাই ভোট নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যাথা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট হলে অভিভাবকেরা আমাদের পাশেই থাকবেন, সে ব্যাপারে আমরা একশো শতাংশ নিশ্চিত। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনে বিরোধীরা নিজেদের প্রাসঙ্গিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’’ পুলিশ জানা, বোমা ছোড়ার ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।