দুর্গাপুর
দুর্গাপুরের ১০টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় জল জমে যায়। সবথেকে বেশি সমস্যায় তামলা, মেনগেট, ওয়ারিয়া, মানা, খাটপুকুর। ফুলঝোড়, বেনাচিতি, রাতুরিয়া-অঙ্গদপুরের একাংশও জলমগ্ন। তামলা নালার জল উপচে ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বহু বাড়ি জলমগ্ন। বাড়ির দেওয়াল ভেঙে জখম তিন জন। দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপে অরবিন্দ রোড, আদালতের সামনের রাস্তা গাছ পড়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গাছ ভেঙেছে কুমারমঙ্গলম পার্কেও। পরে বন দফতর ও দমকল গাছ সরায়।
দুর্গাপুরে মেনগেট এলাকা।
কুলটি-সালানপুর
কুলটির নিয়ামতপুরের প্রিয়াকলোনি, কলেজরোড, অরবিন্দ নগর জলমগ্ন। বরাকরের রিভারসাইডে কাঁচা নর্দমার একাংশ ধসে গিয়েছে। বালতোড়িয়ায় নিকাশি নালা উপচে বেশ কিছুটা অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সালানপুরের ডাবর কোলিয়ারিরর এজেন্ট কার্যালয়, আছড়া সামডি রোড, রূপনারায়ণপুরের জোড়বাঁধ, সালানপুর ব্লকের বহু গ্রামের রাস্তা জলমগ্ন। কুলটির দুর্গাপুজোর মেলার বেশ কয়েকটি দোকান ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে।
রানিগঞ্জ
রানিগঞ্জের মহাবীর কোলিয়ারি যাদবপাড়া, কুমারবাজারের মুচিপাড়া, রনাইয়ের হুসেনগনর, নবীনগরে ঘরে জল ঢুকেছে। দমকলের কর্মীরা পাম্পের সাহায্যে জল বের করেন। খোলা হয় রাজারবাঁধের লকগেট। রানিগঞ্জের এগারার মণ্ডলপাড়ায় মাটির বাড়ির দেওয়াল ভেঙে মৃত্যু হয়েছে কল্যাণী মাজি (৬০) নামে এক বৃদ্ধার। নুপূর, বেলুনিয়ায় ফসল নষ্ট হয়েছে।
কাঁকসা-বুদবুদ
কাঁকসার গোপালপুর, ত্রিলোকচন্দ্রপুর, আমলাজোড়া পঞ্চায়েতে নানা এলাকা জলমগ্ন। ব্লক হাসপাতাল থেকে জল বের করতে সকাল থেকে পাম্প লাগানো হয়। ব্লকে একশোর বেশি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিজমিও। কাঁকসার ৩ নম্বর কলোনিতে রাস্তায় গাছ ভেঙেছে। ডুলে খালের জল বাড়ায় ত্রিলোকচন্দ্রপুর থেকে ভাতকুণ্ডা যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। বুদবুদের জাতীয় সড়কের পাশে সাধুনগর এলাকাটি মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত জলমগ্ন। বুদবুদ, চাকতেঁতুল, মানকর পঞ্চায়েতে প্রায় দু’শোটি, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে বহু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। দুর্গাপুর-ফরিদপুরে টুমনি নদীর জল উপচে ডুবে গিয়েছে দু’পাশের ধানজমি।
প্রশাসনের ভূমিকা
দুর্গাপুরে মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, বিডিও-রা এলাকা পরিদর্শন করেন। ত্রিপল বিলি, দুর্গাপুরে জলবন্দি পরিবারগুলিকে রান্না করা খাবার দেওয়া হয়। মহকুমাশাসক জানান, মহকুমার প্রায় আড়াই হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। গলসির সাধুনগরে ত্রাণকেন্দ্র, দুর্গাপুরে প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ১২ জন প্রশিক্ষিত সিভিল ডিফেন্সের স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। দুর্গাপুর পুরসভাও ত্রাণ বিলি করছে। আসানসোলের মুৎসুদ্দি মহল্লা ও মহুয়া ডাঙাল এলাকার ১০টি পরিবারকে একবালিয়া প্রাথমিক স্কুলে রাখা হয়েছে। ঝোপড়পট্টি এলাকায় ১৫টি পরিবারকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। রানিগঞ্জের কুমারবাজার মুচিপাড়ায় দু’নম্বর বরো চেয়ারম্যান সঙ্গীতা সারদা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বিপন্ন পরিবারগুলিকে বিস্কুট দিতে যান। বাসিন্দারা নিকাশি সংস্কারের আর্জি জানান। প্রশাসন জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে এগারায় বৃদ্ধার মৃত্যু প্রমাণিত হলে মৃতার পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।