নিজস্ব চিত্র
টাকাপয়সার অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দেড়শো বছরের পুরনো মণ্ডল পরিবারের পুজো। তখন গ্রামবাসীরাই পুজোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেন। হিন্দুদের পাশাপাশি গ্রামের মুসলিম পরিবারের লোকেরাও এগিয়ে এসে সেই পুজো আবার চালু করেছিলেন। তার পর থেকে ফি বছর সম্প্রীতির অনন্য নজিরের সাক্ষ্যবহন করে চলেছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের গোয়ালআড়া গ্রামের সেই দুর্গাপুজো।
এক কালে ওই পুজো শুধু মণ্ডল পরিবারের পুজো বলেই খ্যাত ছিল। পরিবারের অবস্থা যখন ভাল ছিল, তখন বেশ ধুমধাম করেই পুজো হত। কিন্তু পরিবারে অভাব দেখা দিতেই দুর্গাপুজোর আয়োজন বন্ধ হয়ে যায় মণ্ডল বাড়িতে। তার পর থেকেই ওই পুজো আয়োজনের দায়িত্ব গ্রামবাসীদের কাঁধেই। দুর্গামন্দির পরিষ্কার রাখতে ঝাঁট দেওয়া থেকে শুরু করে পুজোর বাজারহাট করা— হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে গ্রামের প্রায় প্রতিটি মানুষই করে থাকেন। গোয়ালআড়ার স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মুস্তাক আলি বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের এই দুর্গাপুজো দেড়শো বছরের প্রাচীন। অনেক আগেই ওই পরিবারে পুজো বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই গ্রামের সকলে পুজোর দায়িত্ব দেন। পুজোয় কোনও খামতি রাখা হয় না। প্রথা মেনে নিষ্ঠার সঙ্গেই পুজো হয়। এই বছর আমরা সরকারি অনুদানও পেয়েছি।’’
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, মহালয়ার দিন থেকেই গ্রামে মোচ্ছবের আয়োজন শুরু হয়ে যায়। তার খরচও সকলেই সমান ভাবে বহন করেন। দুর্গাপ্রতিমা তৈরির সময় থেকেই অংশ নেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। সুনীল মণ্ডল নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘এখন এটা বারোয়ারি পুজো। হিন্দু-মুসলিম সকলের পুজো।’’ আব্দুল গনি নামে এক জন জানান, পুরনো দুর্গামন্দির ভেঙে নতুন মন্দির গড়ারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরাও চাঁদা দিয়ে থাকি। এক জন ব্যবসায়ীও মন্দির নির্মাণের খরচ দেওয়ার কথা বলেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy