Advertisement
E-Paper

ছারপোকার উপদ্রবে অনাময়ের বিছানায় নাজেহাল রোগী

বেশ কয়েকদিন ধরে ছারপোকার উপদ্রবের অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি বিভাগ ‘অনাময়’ হাসপাতালে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০১:৫০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

হাসপাতালের শয্যায় তাদের অবাধ বিচরণ। মাঝে-মধ্যে ‘স্প্রে’ করে তাদের রোখা যেত। কিন্তু ‘লকডাউন’ শুরুর পর থেকে সেই নিয়ন্ত্রণে ভাটা পড়েছে। ফলে, রোগী থেকে তাঁদের পরিজন, সকলেই অস্থির হয়ে উঠেছেন ছারপোকার উপদ্রবে। চিন্তা বাড়ছে স্বাস্থ্যকর্তাদেরও।

বেশ কয়েকদিন ধরে ছারপোকার উপদ্রবের অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি বিভাগ ‘অনাময়’ হাসপাতালে। রোগীদের একাংশের অভিযোগ, ঝাঁকে-ঝাঁকে ছারপোকার আক্রমণে রাতের ঘুম উধাও হয়ে গিয়েছে। প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে এক জন করে থাকার নিয়ম অনাময় হাসপাতালে। ছারপোকার উৎপাতে তাঁদেরও নাজেহাল দশা। হাসপাতালের এক কর্মীর কথায়, ‘‘করোনার আতঙ্কের মধ্যে অনাময় কাঁপছে ছারপোকার উপদ্রবে! কেউ শান্তিতে বসতে পারছেন না।’’

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দিষ্ট করা একটি সংস্থা মাসে দু’বার ছারপোকা নিধনে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘স্প্রে’ করতে আসে। ‘লকডাউন’-এর পর থেকে ওই সংস্থার কর্মীরা আসেননি। তাই ছারপোকা বংশবিস্তার করে হাসপাতালের বিছানায় অবাধ বিচরণক্ষেত্র তৈরি করে ফেলেছে বলে মনে করছেন হাসপাতালের কর্তারা। অনাময় হাসপাতালের সুপার শকুন্তলা সরকার বলেন, ‘‘বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের উপ-অধ্যক্ষ তথা হাসপাতাল সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত জানান, মঙ্গলবারই ‘স্প্রে’ করার সংস্থাকে ফোন করা হয়েছিল। ‘লকডাউন’-এর জন্যে আটকে পড়ায় তাদের কর্মীরা আসতে পারেননি। আজ, বুধবার তাঁরা এসে ‘স্প্রে’ করে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে ফ্রান্সে শুরু হয়েছিল ছারপোকার উপদ্রব। পরিস্থিতি সামলাতে সেখানকার সরকারকে নানা ভাবে প্রচার করতে হয়। ছারপোকার হাত বাঁচতে কী কী করণীয়, বাসিন্দাদের পরামর্শ দিতে হয়। অনাময় হাসপাতালেও সন্ধ্যার পরে বিছানার তলা বা ব্যাগের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে এই কীট। হাসপাতালে ৯০টি শয্যা রয়েছে। বেশিরভাগেই রোগী রয়েছেন। এক রোগীর কথায়, ‘‘রাতে ওষুধ খেয়ে ঘুমোতে হয়। ছারপোকার কামড়ে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। খুব অস্বস্তিকর লাগছে।’’

এই হাসপাতালে মূলত স্নায়ু ও হৃদরোগের চিকিৎসা হয়। এ ছাড়া, ‘ট্রমা কেয়ার সেন্টার’ খোলা হয়েছে। শুধু পূর্ব বর্ধমান নয়, আশপাশের জেলা এমনকি, লাগোয়া রাজ্য থেকেও চিকিৎসার জন্য অনেকে আসেন। রোগীদের একাংশের দাবি, ‘‘হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। রোগীর আত্মীয়দের যখন খুশি যাতায়াত নেই। পরিষেবাও তুলনায় ভাল। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই ছারপোকার আতঙ্ক চেপে বসেছে।’’ রোগীর পরিজন বিষ্ণুপ্রিয়া চৌধুরী, সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়দের বক্তব্য, ‘‘নানা রকম ‘স্প্রে’ কিনে এনে বিছানার চারপাশে, নীচে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছারপোকার উৎপাত আটকানো যাচ্ছে না। তাদের কামড়ে সর্বাঙ্গ ফুলে যাচ্ছে, দাগ হয়ে যাচ্ছে।’’ প্রশান্ত সামন্ত, দেবু মান্না, সাজ্জাদ হোসেনদের কথায়, ‘‘প্রথমে মশার কামড় ভেবেছিলাম। পরে দেখি, বিছানার নীচে ঝাঁকে-ঝাঁকে ছারপোকা!’’

শুধু অনাময় নয়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, রাধারানি ওয়ার্ডেও ছারপোকার উপদ্রব রয়েছে বলে রোগীদের অনেকে অভিযোগ করেন। সুপার প্রবীরবাবুর আশ্বাস, ‘স্প্রে’ করা হলেই এই উৎপাত আর থাকবে না।

Bardhaman Medical College Bardhaman Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy