E-Paper

‘দ্বন্দ্বে’ তেতে উঠল গ্রাম, মার-ভাঙচুর

মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের তেতে ওঠে এলাকা। অভিযোগ, ফের দলের অন্দরে ব্লক সভাপতির অনুগামী হিসাবে পরিচিত কয়েক জন তপনের বাড়িতে হামলা চালান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৫৭
ভাঙচুর হওয়া একটি বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

ভাঙচুর হওয়া একটি বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

দু’পক্ষের অশান্তিতে দফায়-দফায় তেতে উঠল পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের সন্ধিপুর গ্রাম। মঙ্গলবারের ঘটনা। অভিযোগ, চারটি বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য-সহ তিন জন জখম হয়েছেন। ওই সদস্যের পরিবারের তরফে দলেরই ব্লক সভাপতির অনুগামীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। যদিও, সংশ্লিষ্ট গলসি ১-এর ব্লক সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় অভিযোগে আমল দেননি। এ দিকে, বিরোধীদের অভিযোগ, বালিঘাটের দখল নিয়েই এই অশান্তি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত সোমবার মকর সংক্রান্তির দিন। সন্ধিপুর গ্রাম লাগোয়া ডিভিসি সেচখালের পাড়ে পিকনিক করছিলেন বুদবুদ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য তপন বাগদি-সহ দলেরই কয়েক জন কর্মী-সমর্থক। সেই সময়েই তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে অশান্তিতে জড়ায় ওই দলটি। তপনের স্ত্রী পদ্মার সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে অভিযোগ, ওই দিন তাঁর স্বামী তপনকে জনার্দনের অনুগামীরা মারধর করেন। অভিযোগ, এর পরে, রাতে তপনের বাড়িতে চড়াও হন কয়েক জন। ভাঙচুর করা হয় বাড়ি।

মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের তেতে ওঠে এলাকা। অভিযোগ, ফের দলের অন্দরে ব্লক সভাপতির অনুগামী হিসাবে পরিচিত কয়েক জন তপনের বাড়িতে হামলা চালান। মারধর করা হয় পদ্মাকেও। অভিযোগ, পড়শিরা এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। চলে বাড়ি ভাঙচুর। ঘটনায় কালিপদ বাগদি নামের এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হন। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এর পরে আরও উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। দু’পক্ষের মধ্যে ইট, পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। এ বার, ব্লক সভাপতির অনুগামী হিসাবে পরিচিত কয়েক জনের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। নিজেকে তৃণমূল সমর্থক পরিচয় দিয়ে গ্রামেরই বাসিন্দা সাহিনা বেগমের অভিযোগ, “সোমবার গ্রামের মোড়ের কাছে ঝামেলা হয়েছে। কিছুই জানতাম না। এই দিন তপন বাগদির অনুগামীরা এসে বাড়িতে হামলা চালান। শাশুড়িকে মারধর করা হয়।” দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

অশান্তির খবর পেয়ে এসিপি (কাঁকসা) সুমনকুমার জয়সওয়ালের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। গ্রামে পুলিশের টহল রয়েছে। এসিপি বলেন, “পাড়ায়-পাড়ায় নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক।” পাশাপাশি, যাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠছে, সেই তৃণমূল নেতা জনার্দনের বক্তব্য, “গ্রামগত বিবাদ এটা। রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই। পুলিশ পুরো বিষয়টি দেখছে।”

বিষয়টি জানাজানি হতেই তোপ দেগেছেন বিরোধী নেতৃত্ব। বিজেপির বর্ধমান (সদর) সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি রমন শর্মার দাবি, “বালিঘাটের দখল নিয়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর ঝামেলা হয়েছে। তৃণমূলের কেউ কাউকে ভাগ দেয় না। সন্ধিপুরের ঘটনা সেটারই প্রমাণ।” সিপিএমের গলসি ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক হারাধন ঘোষেরও প্রতিক্রিয়া, “ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে কোন্দল চলছে। বুদবুদ-সহ গোটা রাজ্যে একই হাল।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জনার্দন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Budbud TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy