Advertisement
E-Paper

টিকার লাইনে শুধুই অপেক্ষা, সংশয় ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের টিকা নিয়েও

বেশির ভাগ টিকাকেন্দ্রে ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই’ বলে বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২১ ০৬:৫৩
আলমগঞ্জ পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা না থাকার বিজ্ঞপ্তি।

আলমগঞ্জ পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা না থাকার বিজ্ঞপ্তি। নিজস্ব চিত্র

শুরু থেকেই ‘কোউইন’ পোর্টালে নাম তুলতে গিয়ে সমস্যার অভিযোগ উঠেছে। আবার নাম নথিভুক্তি হলেও কবে থেকে প্রতিষেধক মিলবে তার নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। ফলে, ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের আজ, শনিবার থেকে করোনা টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও, তা দেওয়ার কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেনি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য-কর্তারা জানিয়েছেন, ওই বয়সীদের প্রতিষেধক দেওয়া নিয়ে কোনও পরিকল্পনা বা নির্দেশিকা পৌঁছায়নি। এ দিকে, শুক্রবারও জেলা জুড়ে টিকা নিয়ে ‘হাহাকার’ দেখা গিয়েছে। বেশির ভাগ টিকাকেন্দ্রে ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই’ বলে বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্য-কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের কাছেও টিকা সংক্রান্ত কোনও তথ্য নেই।

মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে ভোর ৩টে থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন চোতখণ্ড গ্রামের গৌরী ঘোষ। বেলা দেড়টা নাগাদ তিনি জানতে পারেন, আর টিকা দেওয়া হবে না। তাঁর ক্ষোভ, “ওই ভোরে পাঁচ কিলোমিটার পথ এসে টিকার লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। বেলা দেড়টায় জানানো হল, টিকা পাব না। গরমের মধ্যে এ রকম হয়রানির কোনও মানে হয়!” তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলুইবাজার ১ পঞ্চায়েতের দাদপুরের বাসিন্দা জয়দেব মুখোপাধ্যায়। টিকা জোটেনি তাঁরও। এ দিন ওই হাসপাতাল থেকে প্রথম ডোজ় পেয়েছেন ৩০ জন, দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৬০ জন। ফিরে গিয়েছেন প্রায় ১৫০ জন। জেলার ৪০টি টিকাকেন্দ্রের মধ্যে মাত্র সাতটি কেন্দ্রে খুবই সামান্য সংখ্যায় টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর ৩টে-৪টে থেকে টিকাকেন্দ্রের বাইরে লাইন পড়ছে। বাড়ি থেকে মুড়ি-শসা নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছেন অনেকে। কাটোয়া মহকুমার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে সোনালি বেগম বলেন, “প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে আমাদের বাড়ি। শাশুড়িকে নিয়ে এসেছি। শসা-মুড়ি নিয়ে ভোর ৩টেয় বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। আমাদের মতো অনেকেই বাড়ি থেকে জলখাবার বয়ে নিয়ে এসেছেন।’’

একই ছবি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজেও। এ দিন ভোর থেকে লাইন দিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রতিষেধক মিলবে না বলে জানতে পারেন রাজীব মল্লিক, নূরন্নেসা বিবি, মালতি হাজরা, অবন ঘোষেরা। তাঁদের দাবি, ভোর থেকে লাইন দিয়ে টিকা তো মিললই না, বরং, সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ল। বর্ধমান মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রথম ডোজ় পেয়েছেন ৫০ জন, দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ২৫০ জন। এ ছাড়া, বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিষেধক নেওয়ার লাইনে ধাক্কাধাক্কি, মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। বহু জায়গায় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর পরে, কিছু লোকের হাতে টোকেন ধরিয়ে জানানো হয়েছে, শুধু তাঁরাই ওই দিন টিকা পাবেন। বাকিদের চলে যেতে বলা হয়েছে, এমনও অভিযোগ উঠেছে। আবার বার বার হত্যে দিয়েও টিকা নেওয়ার তারিখ পাওয়া যাচ্ছে না, জানিয়েছেন অনেকে।

পূর্ব বর্ধমানে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ রয়েছেন। তার মধ্যে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে মানুষের সংখ্যা ন’লক্ষের সামান্য বেশি। তার মধ্যে অর্ধেকও প্রথম ডোজ় পাননি। এর মধ্যেই ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা কী ভাবে দেওয়া হবে তা নিয়ে ঘুম উড়ে গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। তাঁদের আশঙ্কা, টিকার অভাব চলতে থাকলে, গোলমাল আরও বাড়বে।

COVID-19 COVID Vaccine
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy