দুর্গাপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এক কেন্দ্র চলে এমন ঘরেই। নিজস্ব চিত্র।
দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা খসা। ছাদ থেকে ঝুলছে চাঙড়। যে ঘরে খুদেরা বসে, তারই এক পাশে চলছে রান্নাবান্না। বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে দেখা যায় এমনই সব ছবি। দুর্গাপুরের কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়িতে অভিযানের পরে আবার অভিযোগ উঠেছে, দেরি করে আসেন কর্মীরা। পুরসভার এই কেন্দ্রগুলির হাল ফেরাতে কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছে মহকুমা প্রশাসন।
শিশু ও প্রসূতিদের পরিপূরক খাবার দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি এই সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কয়েকটিতে ঘুরে দেখা গিয়েছে, রান্না করার মতো পরিকাঠামো বা পরিবেশ নেই বেশির ভাগেই। দুর্গাপুরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কুড়ুলিয়াডাঙার অঙ্কুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে শৌচাগার, বসার বেঞ্চ কিছুই নেই। গোসাইডাঙার কেন্দ্র চলছে ভাঙা বাড়িতে। বেহাল কুয়ো আঢাকা পড়ে। অসাবধানে পড়ে যেতে পারে শিশুরা। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কাণ্ডেশ্বরে বা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তামলা কলোনির কেন্দ্রগুলি চলছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। রামকৃষ্ণপল্লির কেন্দ্রটিতে শৌচাগার নেই, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এইচএসসিএল কলোনির কেন্দ্রে জল, বিদ্যুৎ মেলে না। রুইদাসপাড়ায় সুকান্ত শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের ভবনই নেই। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ধুনুরা প্লটের কেন্দ্রে সকালে পুরসভার কলের জলই ভরসা। গোঁসাইনগরে ছাদ ফুটো হয়ে জল পড়ে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দপল্লির কেন্দ্রেও শৌচাগার নেই, টিনের চালের ফুটো দিয়ে জল পড়ে। সাপের উৎপাত রয়েছে বলে অভিযোগ। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্নপূর্ণানগরের কেন্দ্রে যে ঘরেই শিশুরা থাকে, সেখানেই রান্না হয়। যে কোনও সময় আগুন লেগে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। শহরের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়িতে ছবিটা কমবেশি একই রকম।
পরিকাঠামোর এই সমস্যার পাশাপাশি যোগ হয়েছে বহু কেন্দ্রে কর্মীদের দেরিতে আসার অভিযোগ। সম্প্রতি পুরসভার ৫ নম্বর বরো চেয়ারম্যান ধর্মেন্দ্র যাদব পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন, কাদা রোড, গ্যামন কলোনি-সহ নানা এলাকার গোটা চারেক কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সময়ের এক ঘণ্টা পরেও কর্মীদের দেখা নেই। কেন্দ্রগুলিতে তালা লাগিয়ে তিনি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। ইতিমধ্যে সেই সব কেন্দ্রের কর্মীদের কাছে শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিকের দফতর থেকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি অঙ্গনওয়াড়ির নানা বিষয় নিয়ে মেয়র পারিষদ, কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। কেন্দ্রগুলি যাতে ঠিক ভাবে চলে তা দেখতে ২৮ ডিসেম্বর সব কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy