এলাকায় কর্তারা। নিজস্ব চিত্র।
খনি সম্প্রসারণ করতে গিয়ে রানিগঞ্জের বাঁশড়ায় কয়েকজন পাট্টাদারের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বিধানসভায় চলতি বছরেই অভিযোগ করেছিলেন সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত। মঙ্গলবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ইসিএলের কুনস্তরিয়া এরিয়ার বাঁশড়া খোলামুখ খনি লাগোয়া সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করার কথা জানাল জেলা প্রশাসন।
এ দিন পরিদর্শক দলে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (এলআর) তথা ডিএলএলআরও অপ্রতিম ঘোষ, বিএলএলআরও (রানিগঞ্জ) সুমন সরকার, আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতের প্রধান নিনেশ বাউড়ি এবং কুনস্তরিয়া এরিয়ার কয়েকজন আধিকারিক।
বিএলএলআরও সুমনবাবু জানান, বিধায়ক রুনুবাবু গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় জানান, বাঁশড়ার পাট্টাদারের একাংশের জমির ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর বাড়িতে ফাটল ধরেছে। জাহের থান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সুমনবাবু বলেন, ‘‘বিধায়কের অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের পরিদর্শন। তাঁর অভিযোগের সত্যতা আছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১-এ পঞ্চায়েত ১১ জনকে পাট্টায় এক একর পাঁচ শতক করে কৃষিজমি দিয়েছিল। সেখানে চাষাবাদও হত। পাট্টাপ্রাপক রামচন্দ্র হেমব্রম, জীতেন কোড়ারা বলেন, ‘‘২০১১-য় জমির অদূরেই বাঁশড়া খোলামুখ খনি চালু হয়। খনি সম্প্রসারণের জেরে জমি অধিগ্রহণ না করে, কয়লা কাটা হচ্ছে।’’ বারু বাউড়ি নামে এক জনের দাবি, এর ফলে, দু’জনের জমি ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়েছে। বাকি ন’জনও জমি হারানোর আশঙ্কা করছেন। ওই ১১ জনেরই দাবি, ইসিএল ঠিক দাম দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করুক।
এ দিকে, খনি চালু হওয়ায় জলাশয়গুলি শুকিয়ে গিয়েছে। ফলে, চাষাবাদও করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। খনিতে বিস্ফোরণের জেরে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁশড়া এসটিডি ক্লাবের সম্পাদক সঞ্জয় হেমব্রম জানান, তাঁদের জাহের থানটির অস্তিত্ব বিপন্ন। বিষয়টি তাঁরা জেলা প্রশাসনকেও জানিয়েছেন। সঞ্জয়বাবুর দাবি, ‘‘প্রশাসন এই নিয়ে তিন বার সমীক্ষা, পরিদর্শন করল। দ্রুত বিষয়টির সমাধান হোক। খনি চালু থাক, কিন্তু জনপদওসুরক্ষিত থাকুক।’’
বিএলএলআরও অবশ্য বলেন, ‘‘ফাটল ধরা কিছু বাড়ি ইসিএল সংস্কার করেছে। বাকিগুলিও সংস্কার করবে। পাট্টাদারদের জমি মাপজোক করা হবে। তার পরে ইসিএল জমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরণ দেবে। জাহের থানটিও সুরক্ষিত করা হচ্ছে।’’ বিধায়ক রুনুবাবুরও দাবি, ‘‘জমি অধিগ্রহণ করে ঠিক দাম দেওয়া এবং বাড়িগুলির সুষ্ঠু সংস্কার করা দরকার। এ-ও খেয়াল রাখা উচিত, ইচ্ছের বিরুদ্ধে যেন জমি অধিগ্রহণ না করা হয়।’’ ইসিএলের আধিকারিকেরা জানান, নিয়ম মেনে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy