Advertisement
E-Paper

ফাটল নতুন ঘরে, কোথাও আবার সাপ

প্রসূতিরাও কেন্দ্রের কাছে ঘেঁষতে চান না। ঘেরা জায়গা থাকলেও সাপের ভয়ে খোলা আকাশের নীচেই রান্না হয় ওই কেন্দ্রে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ০৪:০৭
বন্ধ তালিতের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নতুন ঘর। —নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ তালিতের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নতুন ঘর। —নিজস্ব চিত্র।

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নতুন ভবন দিয়ে জল পড়ে। দেওয়ালেও ফাটল। ফলে, স্থানীয় একটি ক্লাবের ভাঙাচোরা ঘরেই চলছে বর্ধমান শহর লাগোয়া তালিতের একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র।

তালিত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে আউশগ্রামের কয়রাপুর। সেখানকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আবার সাপের বাসা। ভয়ে পড়ুয়াদের পাঠানোর সাহস পান না অভিভাবকেরা। প্রসূতিরাও কেন্দ্রের কাছে ঘেঁষতে চান না। ঘেরা জায়গা থাকলেও সাপের ভয়ে খোলা আকাশের নীচেই রান্না হয় ওই কেন্দ্রে। এই পরিস্থিতির কথা জানেন প্রকল্পের আধিকারিকেরা। নতুন ভবন তৈরির টাকাও মিলেছে। কিন্তু ৩ শতক জমির অভাবে টাকা ফেরতও চলে গিয়েছে।

জেলা শিশুবিকাশ প্রকল্পের অনুপম দত্ত বলেন, “তালিতের অঙ্গনওয়াড়িটি তৈরি হওয়ার পরেও কেন পড়ে রয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখব। আর কয়রাপুরের কেন্দ্রটি অন্যত্র করার জন্য ঘর দেখা হচ্ছে।’’

বর্ধমান ১ ব্লকের বাঘার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তালিতের পশ্চিম পাড়ার একটি ক্লাব ঘরে ২০১৪ সাল থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চলছে। এই কেন্দ্রটি অনুমোদিত রয়েছে মালপাড়ার নামে। ২০০৭ সালে চালু হওয়ার পর টানা সাত বছর স্থায়ী ঘর পাননি অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী-সহায়িকারা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সেই সময় অঙ্গনওয়াড়ি চালাতে হতো। ওই কেন্দ্রের কর্মী ছবিরাণী দাস বলেন, “অনেক বলার পর বছর দু’য়েক আগে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য স্থায়ী ঘর তৈরির বরাদ মেলে। এখন ঘর তৈরি হলেও আমরা ঢুকতে পার‍ছি না।’’ ৬ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ভবন তৈরির পরেও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু হচ্ছে না কেন?

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ সাবির আলি, নারায়ণ দাসদের দাবি, “বৃষ্টি পড়লেই নতুন ঘর দিয়ে জল পড়ে। সরকারি টাকা নষ্ট করে ঠিকাদার সংস্থা রং করতে এসেছিল। এলাকার বাসিন্দারা বাধা দিয়েছেন।’’ জেলা পরিষদের সদস্য নূরুল হাসান বলেন, “ঠিকাদার সংস্থা ঠিকমতো কাজ করেনি বলেই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।’’ এ অবস্থায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ‘পরিপূরক পুষ্টি’ তৈরি হচ্ছে পুকুর পাড়ের বাঁশতলায়।

কয়রাপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাও হয় অপরিচ্ছন্ন জায়গায়। ওই কেন্দ্রের কর্মী ইরা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “স্যাঁতসেতে অঙ্গনওয়াড়ি ঘরে সাপের গর্ত আছে। আমরাই সাহস পাই না, ছোট ছোট শিশুরা ঢুকবে কী করে?” তাঁদের অভিযোগ, মাটির দেওয়াল আর টিনের চালার দু’কামরার ঘরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে। দরজা-জানলা ভেঙে পড়ছে। খাবারও চুরি হয়ে যায়।

অথচ এই কেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর থেকে ২০১৪ সালে ৬ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা ও ২০১৬ সালে সরকার ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। স্থানীয়দের ক্ষোভ, টাকা আসার পরেও জমির ব্যাপারে ব্লক প্রশাসন চুপ ছিল। টাকা চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরির হওয়ার পরেও ব্লকের কর্তারা উদ্যোগ করেননি। ওই ব্লকের শিশুবিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক আশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জমি মেলেনি বলে টাকা ফেরত গিয়েছে। ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হবে।

Anganwadi Infrastructure
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy