E-Paper

হাসপাতাল স্থানান্তর করায় ক্ষোভ কুলটিতে

সিটু নেতা সুজিত ভট্টাচার্য বলেন, “এটা অত্যন্ত অমানবিক সিদ্ধান্ত। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে, প্রতিবাদ জোরাল হবে।” বিক্ষোভ শেষে কর্তৃপক্ষকে দাবিপত্র দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ০৯:০০
সেলের সামনে জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

সেলের সামনে জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

দুষ্কৃতীরা যথেচ্ছ লুটপাট চালিয়ে ক্ষতি করছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। এই অভিযোগ কুলটির ইস্কো কর্তৃপক্ষের। ‘নিরাপত্তার’ স্বার্থে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে কারখানার মধ্যে স্থানান্তর করেছেন কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে বুধবার সকালে কারখানার গেটে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আইএনটিইউসি। সমর্থন জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন সিটু নেতৃত্বও। তাঁদের অভিযোগ, সংস্থার প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীরা সমস্যায় পড়েছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে দ্রুত যথাস্থানে ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও এই সিদ্ধান্ত সাময়িক বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

সেল গ্রোথ ডিভিশনের কুলটির ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে সম্প্রতি স্থানান্তর করেন কর্তৃপক্ষ। আইএনটিইউসি নেতৃত্বের অভিযোগ, এর ফলে সংস্থার প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীদের অনেক বেশি পথ ঘুরে চিকিৎসার জন্য যেতে হচ্ছে। আইএনটিইউসি নেতা সুপ্রভাত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীরা সকলেই প্রবীণ নাগরিক। এই অবস্থায় কারখানায় ঢুকতে হলে, আলাদা একটি পাশ বানিয়ে সিআইএসএফ-এর অনুমতি নিয়ে কারখানায় ঢুকতে হচ্ছে। বেশি সমস্যায় পড়ছেন মহিলারা। আমরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।” সিটু নেতা সুজিত ভট্টাচার্য বলেন, “এটা অত্যন্ত অমানবিক সিদ্ধান্ত। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে, প্রতিবাদ জোরাল হবে।” বিক্ষোভ শেষে কর্তৃপক্ষকে দাবিপত্র দেওয়া হয়।

হাসপাতাল স্থানান্তর করার প্রসঙ্গে সেল গ্রোথ ডিভিশনের জিএম শুভাশিস সেনগুপ্ত দাবি করেন, “সম্প্রতি দুষ্কৃতীরা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে। কেন্দ্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই সেটির এখন সংস্কারের কাজ চলছে। স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত একেবারেই অস্থায়ী। দ্রুত আগের স্থানে ফেরানো হবে।” শুভাশিস জানিয়েছেন, যত দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি আগের জায়গায় ফিরছে না, তত দিন শ্রমিক-কর্মীরা মেডিক্যাল বই দেখিয়েই কারখানায় ঢুকতে পারবেন। তাঁদের আলাদা করে পাশ বানাতে হবে না। সিআইএসএফ কর্মীরা তাঁদের স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছে দেবেন। কারও হেঁটে যেতে সমস্যা হলে, গাড়িরও ব্যবস্থা করা হবে।

ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মুখ্য চিকিৎসক সুরজিৎ মিশ্রের অভিযোগ, গত ২ মে রাতে দুষ্কৃতীরা লুটপাট চালিয়েছে। ওষুধ ও অন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও নিরাপত্তাকর্মী থাকেন না। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সংস্কারের পরে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে কুলটি কারখানায় একটি পূর্ণাঙ্গ ৭০ শয্যার হাসপাতাল ছিল। যে ভবনে এই হাসপাতাল ছিল, সেটি এক সময় ডিরেক্টর বাংলো বলে পরিচিত ছিল। সংস্থার প্রাক্তন ডিরেক্টর বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাসভবন ছিল এটি। কারখানা রাষ্ট্রীয়করণের পরে, ১৯৮৫-এর ৩১ জানুয়ারি এই ভবনেই শ্রমিক-কর্মীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল তৈরি করা হয়। ২০০৩-এ কুলটি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮-এ কারখানাটি ফের সেল গ্রোথ ডিভিশনের নাম নিয়ে খোলে। তবে ২০০৩-এ কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে, হাসপাতালের সমস্ত শয্যা তুলে দিয়ে ছোট একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র করা হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

kulti Isco

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy