দামোদরের দু’পাড়ে দুটি পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় গীতাঞ্জলি আবাসন প্রকল্পে তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দুটি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির দিকে। মেমারি ১ ও খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা অভিযোগ মেনে নিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতিকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন স্থানীয় বিধায়কেরা। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বর্ধমানের দুই মহকুমাশাসককে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
কয়েক দিন আগে মেমারি ১ ব্লকের কাঁটাপুকুর, বীরশিমুল-সহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা জেলাশাসককে লিখিত ভাবে জানান, এলাকার তক্তিপুর, বহরমপুর, বাগাগড়িয়া, বড়র, বাগিলা, গোবিন্দপুর, নুদিপুর, শ্রীহরিপুর, মণ্ডলজোনা, গন্তার, শঙ্করপুর-সহ বিভিন্ন গ্রামে গীতাঞ্জলি প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের তালিকায় বেশ কিছু অবস্থাপন্ন লোকের নাম রয়েছে। ওই পঞ্চায়েত সমিতির কাঁটাপুকুরের চুনিলাল টুডু, বীরশিমুলের সুজয় মণ্ডলদের দাবি, বিপিএল কোটায় ও ইন্দিরা আবাসন যোজনায় নাম থাকায় আগেই ঘর পেয়েছেন, এমন বাসিন্দাদের নাম রয়েছে তালিকায়। পাকাবাড়ি, জমি-জায়গা রয়েছে সে রকম বেশ কিছু নাম রয়েছে। এ ছাড়াও দেবীপুর পঞ্চায়েতের বাগগড়িয়ায় পাকা বাড়ি ও মুদির দোকান রয়েছে এমন লোকের নামও প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে। আবার গন্তার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মণ্ডলজোনা ও জয়রামপুরে আলুর ব্যবসায়ী ও মণ্ডপ ব্যবসায়ীরও নাম তালিকায় আছে। একই অভিযোগ খণ্ডঘোষেও। সেখানকার শাঁখারি, গোপালবেড়া, কৈয়ড়, উখরিদ, লোদনা, বেড়ুগ্রামের বাসিন্দারা জানান, ছাতিমপুর, জুবিলা, কামদেবপুর, নিশ্চিন্তপুরে অনেক স্বচ্ছল পরিবারের নাম রয়েছে তালিকায়। সরঙ্গা গ্রামে যাত্রীবাহী গাড়ির মালিকের নামও তালিকায় আছে বলে তাঁদের দাবি।
অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী বাসবী রায় বলেন, ‘‘অভিযোগ আমাদের কানে এসেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে তালিকা আসায় কয়েকটি ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। ওই সব নামগুলি আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের কথায়, ‘‘কয়েকটি নামের ক্ষেত্রে আপত্তি রয়েছে। সেই নামগুলি খতিয়ে দেখে তালিকা প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।’’
মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাহী আধিকারিক শৈলশেখর সরকার বলেন, ‘‘অভিযোগ ওঠায় কয়েকজনের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে।’’ আর ওই পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রধানদের শংসাপত্র পাওয়ার পরেই গীতাঞ্জলি নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে যদি গরিবদের বদলে অন্য কারও নাম থাকে তাহলে প্রধানদের বিরুদ্ধেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’ আর মেমারির বিধায়ক নার্গিস বেগম বলেন, ‘‘গীতাঞ্জলি প্রকল্পে গরিব মানুষ বাদে অন্য কারও নাম যাতে না থাকে, তা স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে।’’