এ ভাবেই শুক্রবার দুর্গাপুর ব্যারাজে কয়েক জনকে লাইফ জ্যাকেট না পরে নৌকা-ভ্রমণ করতে দেখা গিয়েছে। ছবি: বিকাশ মশান
জনসাধারণের নিরাপত্তার কথা ভেবে ছ’দফা নির্দেশিকা জারি করেছে পুলিশ। কিন্তু শুক্রবার দুর্গাপুর ব্যারাজে গিয়ে দেখা গেল, কোনও নির্দেশই মানা হচ্ছে না। সব কিছু চলছে ‘আপন’ নিয়মেই। এর ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার ডেপুটি কমিশনারের (পূর্ব) দফতর থেকে জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, লাইফ জ্যাকেট না পরে নৌকা-ভ্রমণ চলবে না। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরা লাইফ জ্যাকেট নিয়ে হাজির থাকবেন। নৌকার ‘স্বাস্থ্য’ খতিয়ে দেখার পরেই তা চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে মাঝিকে। সূর্যাস্তের পরে আর নৌকা চালানো যাবে না। নজরদারির জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশকর্মীদের মোতায়েন করা হবে।
অথচ, শুক্রবার দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ ব্যারাজে গিয়ে দেখা গেল, নির্দেশিকা মানা দূরঅস্ত্। নজরদারির জন্য কাছেপিঠে কাউকে দেখা যায়নি বলে স্থানীয়দের দাবি। নৌকা-পরীক্ষা সম্পর্কে মাঝি ভৈরব বাগদি বলেন, ‘‘গত বছর আমাদের নাম-ধাম নিয়ে গিয়েছিল। এ বার কেউ এখনও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগই করেননি।’’
এ দিন ব্যারাজে তেমন ভিড় ছিল না। তবে তার মধ্যেও দেখা গেল, দু’-একজন লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নৌকায় চড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক বলেন, ‘‘লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই চড়েছি। কেউ কিছু বলেননি।’’ বিপদ হলে তখন? ‘‘আসলে অত কথা ভাবিনি। লাইফ জ্যাকেট পরা দরকার’’, বলেন ওই যুবক। বছরের শেষে দুর্গাপুর-সহ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ দুর্গাপুর ব্যারাজে পিকনিক করতে আসেন। অনেকেই নৌকাবিহারও করেন। এমনকি শিশুদের নিয়েও বিপজ্জনক ভাবে নৌকায় ঘুরতে দেখা যায়।
তবে এ দিন ঘাটে মহকুমা প্রশাসনের তরফে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের দু’জন সদস্যকে হাতে দু’টি করে লাইফ জ্যাকেট নিয়ে দেখা গিয়েছে। তাঁরা এসেছেন কোনও বিপদ হলে উদ্ধার কাজের জন্য। তাঁরা জানান, তেমন কিছু ঘটলে নিজেরা একটি করে জ্যাকেট পরবেন। সাহায্যকারী আরও দু’জনকে দু’টি জ্যাকেট দেবেন। এ দিন ব্যারাজের কোথাও কোনও পুলিশকর্মীর দেখা মেলেনি। নিয়ম ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের উল্লেখ ছিল নির্দেশিকায়। কিন্তু পুলিশ না থাকায় এ দিন কে নিয়ম ভাঙলেন, আর কে নিয়ম মানলেন, তা আদৌ বোঝা গিয়েছে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে আশপাশের এলাকায়।
বিষয়টি নিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা বলেন, ‘‘নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে। কেন এ দিন পুলিশ ছিল না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy