হস্টেলের রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
বছর দেড়েক আগে নিরাপত্তার দাবিতে টানা ২৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি চালিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তার পরেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজেরে নিরাপত্তারক্ষী ৩৬ থেকে বেড়ে হয় ২৯২। কিন্তু রক্ষীর সংখ্যা বাড়লেও নিরাপত্তার ফাঁক যে বোজেনি তা বোঝাল মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবারের ঘটনা।
শুধু হাসপাতাল চত্বর নয়, হাসপাতাল থেকে ডাক্তারদের হস্টেল যাওয়ার রাস্তা এমনকি, রাস্তার ধারে থাকা মহিলা চিকিৎসরকদের হস্টেলের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল। অ্যাসিড ছোড়ার হুমকি শুনে রাতভর দরজা-জানালা বন্ধ করে জেগে কাটাতে হয়েছে বলেও দাবি মহিলা চিকিৎসকদের।
ওই ডাক্তারদের একাংশের অভিযোগ, হস্টেলের ধারেই রাস্তা। পাঁচিল উঁচু না হওয়ায় যখন-তখন বহিরাগতরা তা টপকে মাঠে ঢুকে পড়েন। চলে মদ-গাঁজার আড্ডা। হস্টেলের গেটও কার্যত অরক্ষিত। সন্ধ্যার পর থেকে অনায়াসে ভেতরে ঢোকা যায়। মহিলা চিকিৎসকদের দাবি, ওই সব বহিরাগতরা মাঝেমধ্যেই অভব্য আচরণ করেন। কিন্তু মঙ্গলবার রাত আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়েছে তাঁদের। তাঁদের দাবি, মাঝরাত থেকেই হস্টেলের পাশের রাস্তায় ৪-৫টি মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য শুরু হয়। মাঝেমধ্যে হস্টেলের সামনে দাঁড়িয়ে গালিগালাজও করা হচ্ছিল। জানলা দিয়ে মুখ বাড়াতেই ‘এ বার অ্যাসিড ছোড়া হবে’ হুমকি দেওয়া হয় বলেও তাঁদের অভিযোগ। তা শোনার পর থেকেই দরজা-জানালা বন্ধ করে সারা রাত ঘরে বসেছিলেন তাঁরা।
বুধবার মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্টেলের পাঁচিল উঁচু করা, নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশ ক্যাম্পের দাবি জানান ওই চিকিৎসকেরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজ থেকে হস্টেল যাওয়ার পথে মাঝেমধ্যেই তাঁদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। অন্ধকারে কখনও ছিনতাই, এমনকি শ্লীলতাহানিরও ঘটনাও ঘটেছে।
জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, দোতলার অপারেশন থিয়েটার, রাধারানি ওয়ার্ডে নামেই নিরাপত্তারক্ষী আছে। কিন্তু অবাধে লোকজন যাতায়াত করে। এক জন রোগীর সঙ্গে আসেন অন্তত পাঁচ জন। কখনও রক্ত, কখনও ‘বেড’ না পাওয়ার দাবিতে চিকিৎসকদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বুধবার গোলমালের সময়েও প্রসূতি বিভাগের এক রোগীর আত্মীয়কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে রক্ষীদের বিরুদ্ধে। তার পর থেকে অবশ্য হাসপাতালে দেখা যায়নি রক্ষীদের। এ দিন প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বৈঠকেও বারবার নিরাপত্তার দাবি ওঠে। জুনিয়র ডাক্তারেরা দাবি করেছেন, সুষ্ঠু পরিবেশ, নিরাপত্তা না থাকলে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁদের একাংশের দাবি, হাসপাতাল চত্বরে হাউস স্টাফদের যে থাকার জায়গা রয়েছে সেখানে মহিলা চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থা করা গেলে নিরাপত্তার সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন, ‘‘পুলিশ হাসপাতালে নিরাপত্ত বাড়ানো, টহল দেওয়া ও পুলিশ ক্যাম্প করার ব্যাপারে আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। হস্টেলে যাওয়ার ওই রাস্তায় যে নিরাপত্তা নেই, তা আমরাও টের পেয়েছি।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy