Advertisement
E-Paper

‘বড় রেল’ কাটোয়ায়, জমল ভিড়

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে অবশেষে বর্ধমান থেকে কাটোয়ায় ঢুকল ব্রডগেজ ট্রেন। বর্ধমান-কাটোয়া শাখার প্রথম ব্রডগেজ ট্রেনকে সাক্ষী রেখে তখন ছোট বড় সকলেরই নিজস্বী তোলার ব্যস্ততা। সঙ্গে ট্রেন লক্ষ করে ফুলের বৃষ্টি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৭
উৎসাহ: ট্রেন পৌঁছল কাটোয়ায়। নিজস্ব চিত্র

উৎসাহ: ট্রেন পৌঁছল কাটোয়ায়। নিজস্ব চিত্র

দুপুর গড়াতেই কাটোয়া স্টেশন চত্বরে ইতিউতি ভিড় জমা হচ্ছিল। ঘড়িতে বিকেল ৪টেয় ট্রেনের হর্ন শুনেই রেললাইনের গা ঘেঁষে জড়ো হয়ে গেলেন কয়েকশো উৎসাহী। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে অবশেষে বর্ধমান থেকে কাটোয়ায় ঢুকল ব্রডগেজ ট্রেন। বর্ধমান-কাটোয়া শাখার প্রথম ব্রডগেজ ট্রেনকে সাক্ষী রেখে তখন ছোট বড় সকলেরই নিজস্বী তোলার ব্যস্ততা। সঙ্গে ট্রেন লক্ষ করে ফুলের বৃষ্টি।

গত পাঁচ মাস ধরে বর্ধমান থেকে যে ইএমইউ রেকটি শ্রীখণ্ড পর্যন্ত আপ ও ডাউন ট্রেন হিসাবে যাতায়াত করছিল, সেই ট্রেনটিকেই এ দিন কাটোয়া পাঠানো হয়। দুপুর দুটোয় বর্ধমান থেকে যাত্রী নিয়ে কাটোয়ার উদ্দেশে ট্রেন রওনা দেয়। সাড়ে তিনটেয় কাটোয়ায় ঢোকার কথা থাকলেও ট্রেন ঢুকতে বিকেল চারটে বাজে। সৌজন্যে, অবরোধ! রেল সূত্রের খবর, শ্রীখণ্ড পেরিয়ে কাটোয়া ঢোকার আগে গাঙ্গুলিডাঙ্গায় ট্রেন আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় স্টেশন চালু করতে হবে।

গ্রামবাসী রিজওয়ানুর রহমান, মৃণাল শেখ বলে, ‘‘গাঙ্গুলিডাঙ্গায় আসতে আমাদের বর্ধমানের দিকে তিন কিমি দূরে শ্রীখণ্ডে নামতে হবে, নয়তো আরও তিন কিমি পেরিয়ে কাটোয়ায় নামতে হবে। সেখান থেকে আবার টোটো বা বাসে চেপে বাড়িতে আসতে হবে। এতে সময় আর অর্থ, দুই-ই বেশি লাগবে।’’ অবরোধের সময় ট্রেনেই ছিলন বর্ধমান শাখার টিআই এস চৌধুরী। বাসিন্দাদের দাবি শুনে তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা লিখিত দাবি জানালে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’’ যদিও ট্রেন চালু হওয়ার পর এখনই নতুন স্টেশন চালু করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান রেলকর্মীদের একাংশ।

আধ ঘণ্টা দেরি হলেও ১২ বগির ইএমইউ রেকটি কাটোয়া ঢুকতেই ছুটে আসেন স্থানীয়েরা। ট্রেন থেকে নেমে শিক্ষা দফতরের কর্মী, খাজুরডিহির রবীন্দ্রনাথ পাল, কাটোয়ার মনতোষ খাঁ বলেন, ‘‘৩৪ বছর ধরে বর্ধমানের নিত্যযাত্রী। এত দিন বাসে যেতে হতো। চাকরির শুরু থেকে শুনছি, ট্রেন চালু হবে। কবে কাটোয়া পর্যন্ত ব্রডগেজ ট্রেন চালু হবে, এই আশায় বর্ধমানে বাড়ি বানাইনি। এত দিনে স্বপ্নপূরণ হল।’’ কৈচর থেকে প্রথম ব্রডগেজ ট্রেনে চেপে ঘুরতে এসেছিলেন সাগর রায়, মৈনাক মণ্ডলেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘ছোট রেলকে (ন্যারোগেজ) বিদায় জানানোর দিন ট্রেনে ছিলাম। আজও আছি।’’ তাঁদের মতে, বাসে বর্ধমানের ভাড়া পঁয়ত্রিশ টাকা। সেখানে ট্রেনে ১৫ টাকাতেই যেতে পারবেন যাত্রীরা। যকাটোয়ায় ভিড় দেখে খুশি লোকাল ট্রেনটির চালক শৈলেন মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘এই গুরুত্বপূর্ণ রুটে ট্রেনের যে কতটা প্রয়োজনীয়তা ছিল, তা যাত্রীদের উৎসাহ দেখেই মালুম হচ্ছে।’’

আপাতত দিনে একটি ট্রেনই আপ-ডাউনে চলবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে, ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি সকালের দিকে ট্রেন চালুর দাবি করেছেন যাত্রীরা। তাঁদের কথায়, চিকিৎসা হোক বা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়—সকালের দিকেই বর্ধমান যাওয়ার বেশি প্রয়োজন পড়ে। প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবাশিস বসু বলেন, ‘‘সকালের দিকে বর্ধমান থেকে আসানসোল এবং কাটোয়া থেকে হাওড়াগামী ট্রেনের সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে বর্ধমান-কাটোয়া রুটে ট্রেন দিলে যাত্রীদের সুবিধা হবে।’’ শীঘ্রই নতুন টাইম টেবল তৈরি করে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পূর্ব রেলের তরফে।

তবে ট্রেন চালু হওয়ায় বাসে যাত্রীর সংখ্যা কমবে না বলেই দাবি বাসকর্মীদের। বাস মালিক ইউনিয়নের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র সেন বলেন, ‘‘প্রথমত, বাসের স্টপ অনেক বেশি। সংখ্যাতেও বাস প্রচুর। সেটাই যাত্রীদর সুবিধা।’’

Katwa Broad Gauge Train Burdwan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy