Advertisement
E-Paper

জমি গিলছে মাফিয়ারা, অভিযোগ

এই জমি মাফিয়াদের নজর থেকে ‘বিপজ্জনক এলাকা’ও বাদ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রানিগঞ্জের মূল রাস্তা নেতাজি সুভাষ বসু রোডের পশ্চিম দিকের বিস্তীর্ণ এলাকা ধসপ্রবণ।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৭
জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছিল এখানেও। রানিসায়রে। নিজস্ব চিত্র

জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছিল এখানেও। রানিসায়রে। নিজস্ব চিত্র

ইসিএলের জমি দখল করে প্লট করে বিক্রি করে দিচ্ছে জমি মাফিয়ারা, এমনটাই অভিযোগ রানিগঞ্জের নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের। ইসিএল কর্তাদের আরও দাবি, কোনও রকম অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে সেই জায়গায় তৈরি হয়ে যাচ্ছে বাড়িও। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে বিরোধী সিপিএম-ও।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দার দাবি, আসানসোল পুরসভার অন্তর্গত রানিগঞ্জ শহরের তারবাংলা, মহাবীর কোলিয়ারি, সিহারসোল জলট্যাঙ্কি, জিরাডাঙা এলাকা ও রানিগঞ্জ ব্লকের আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতের বাঁশড়ায় ইসিএলের জমি মাফিয়ারা দখল করছে। তা কিনে বাড়ি তৈরি করে বাস করছে কয়েকশো পরিবার। এ ছা়ড়া জেমারি পঞ্চায়েত-সহ বেশ কিছু এলাকায় আবার মাফিয়ারা নয়, বরং এক শ্রেণির মানুষই জমি জবরদখল করে বাড়়ি তৈরি করেছেন।

এই জমি মাফিয়াদের নজর থেকে ‘বিপজ্জনক এলাকা’ও বাদ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রানিগঞ্জের মূল রাস্তা নেতাজি সুভাষ বসু রোডের পশ্চিম দিকের বিস্তীর্ণ এলাকা ধসপ্রবণ। এর জন্য প্রায় বারো বছর আগে সাবেক বর্ধমানের তৎকালীন জেলাশাসক ওই এলাকায় কোনও রকম নির্মাণকাজ চালানো যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তৎকালীন রানিগঞ্জ পুরসভা ও বর্তমান আসানসোল পুরসভাও ওই এলাকায় নির্মাণকাজের অনুমোদন দেয় না। কিন্তু এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, ওই এলাকাতেও দাপটের সঙ্গে জবরদখলের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জমি মাফিয়ারা।

একের পর এক নানা এলাকায় এ ভাবে জমির হাতবদল হওয়ার প্রসঙ্গে আসানসোল পুরসভার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ ভাঙায় কোনও রকম গা করে না আসানসোল পুরসভা। পুরসভার মূল কার্যালয় দূরে হওয়ায় বাসিন্দারাও অভিযোগ জানাতে পারছেন না। রানিগঞ্জে বরো অফিস থাকলেও সেখানে অভিযোগ জানিয়ে লাভ হয় না।’’

যদিও বিরোধীরা-সহ এলাকাবাসীর একটি অংশের মতে, শুধু ইসিএলের জমিই নয়, এই পুরসভা এলাকার রহমতনগর, সালানপুর, কুলটি-সহ একাধিক জায়গায় অতীতে খাসজমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। কখনও জমির চরিত্র রাতারাতি বদল করে কখনও বা বহিরাগতদের ‘পাট্টা’ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে চড়া দামে জমি বিক্রি করা হয়।

জমি-মাফিয়াদের এই দাপটের অভিযোগ প্রসঙ্গে পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি অবশ্য বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ রুখতে নজরদারি চালানো হয়। কিন্তু ইসিএল জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। নিজেদের জমি রক্ষা করতে ইসিএল কর্তৃপক্ষেরই এগিয়ে আসা উচিত।’’ ইসিএল-এর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের যদিও দাবি, ‘‘যখন প্রয়োজন মনে হয়, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানানো হয়।’’ রানিগঞ্জ বিএলএলআরও অফিস জানিয়েছে, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যেমন, মাস ছয়েক আগে রানিসায়রের রাজাকাঁটা এলাকায় ইসিএলের কয়েক বিঘা জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।

তবে এলাকাবাসীর একটি অংশের দাবি, প্রশাসনের কর্তারা যাইই দাবি করুন না কেন, শিল্প-তল্লাটে জমি বেহাত হওয়ার ঘটনা কিন্তু চলছেই।

Land mafia Land ECL
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy