দিন কয়েক আগে এ ভাবেই ধস নেমেছিল রাস্তার পাশে। —নিজস্ব চিত্র।
শহরের নিকাশির অন্যতম ভরসা এই নালাটি। কিন্তু নালার একাংশ কাঁচা থাকায় প্রায়শই তার পাড় ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকায় ধস নামছে। এর জেরে লাগোয়া রাস্তাটিও অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ছে। আসানসোল পুরসভার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের বরাকর-রিভারসাইড এলাকার ওই নালাটির সংস্কার না হলে যে কোনও সময়ে বড়সড় বিপদ ঘটার শঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাকরের নিকাশির অন্যতম ভরসা এই নালাটি। অথচ নালার একাংশ পাকা না হওয়ায় প্রায় প্রতি দিনই ভাঙছে পাড়। ফি বছর বর্ষায় পরিস্থিতিত আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। দিন কয়েক আগেই প্রবল বর্ষণের জেরে প্রায় ১০০ বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে ধস নেমেছে। তৈরি হয়েছে বিপজ্জনক গর্ত। ক্ষতি হয়েছে মুসলিম বস্তি ও রিভারসাইড কলোনি যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটির। ধসের জেরে মাটিতে মিশে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। আশেপাশের লাগোয়া এলাকাতেও মাটি ফেটে গিয়েছে। বরাকরের ওল্ড জিটিরোড লাগোয়া রিভারসাইড এলাকার বাসিন্দাদের শঙ্কা, দ্রুত সংস্কার না হলে রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গিয়ে মূল শহরের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। স্থানীয় বাসিন্দা অক্ষয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের সব মহলেই সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। এখন ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতেই ভয় হয়।’’ শেখ মুরসালিন নামে আরও এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সারাক্ষণ ভয়, এই বুঝি গোটা এলাকা তলিয়ে গেল।’’
দিন কয়েক আগে যেখানে ধস নামে, তার থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরেই রয়েছে জরাওদেবী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। প্রতিদিনই ওই এলাকা দিয়েই যাতায়াত করেন পড়ুয়ারা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মধুমিতা মজুমদার বলেন, ‘‘সমস্যার কথা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ছাত্রীদের কথা ভেবে ভয় হচ্ছে।’’ ছাত্রীরা যাতায়াতের সময় যাতে বাড়তি সতর্কতা নেয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই অভিভাবকদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, সাবেক কুলটি পুর-কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একাধিকবার আবেদন করা হয়। পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুর ও নগোরোন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠি, আসানসোলের মহকুমাশাসককে জানানো সবই করেছেন বাসিন্দারা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তবে শনিবারের ধসের পরে নড়েচড়ে বসেছে পুরকর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপ করতে এলাকায় এসেছিলেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘সংস্কারের জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এডিডিএ-র সঙ্গে কথা বলে যৌথ ভাবে কাজটি করা হবে।’’ আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী আশ্বাস, ‘‘বাসিন্দাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy