Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পুনর্বাসনের দাবি পাণ্ডবেশ্বরের বাঙালপাড়ায়

রাতে ঘুম নেই, ফের নামল ধস

এলাকাবাসী জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দেখা যায়, জনপদ লাগোয়া ফাঁকা জায়গায় ফাটল তৈরি হয়েছে। রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ ফের ওই একই জায়গাতে ফাটল বড় আকার নেয়। বাসিন্দারা জানান, ফাটলের জেরে প্রায় তিন ফুট গর্ত তৈরি হয়েছে।

২০ ফুট জায়গা জুড়ে প্রায় তিন ফুটের একটি গর্ত তৈরি হয়েছে এলাকায়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

২০ ফুট জায়গা জুড়ে প্রায় তিন ফুটের একটি গর্ত তৈরি হয়েছে এলাকায়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২৬
Share: Save:

একই জায়গায় কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার ধস। তার জেরে পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের কেন্দ্রা পঞ্চায়েতের বাঙালপাড়ায় প্রায় ২০ ফুট জায়গা জুড়ে ফাটল দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দেখা যায়, জনপদ লাগোয়া ফাঁকা জায়গায় ফাটল তৈরি হয়েছে। রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ ফের ওই একই জায়গাতে ফাটল বড় আকার নেয়। বাসিন্দারা জানান, ফাটলের জেরে প্রায় তিন ফুট গর্ত তৈরি হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই এলাকায় দু’হাজার মানুষের বাস। ধসের জেরে সমর রুইদাসের বাড়ির অদূরে কালী ও মনসা মন্দিরের দেওয়ালের একাংশে ফাটল ধরেছে। সমরবাবুর কথায়, ‘‘এ দিন সকালে আচমকা জোরে আওয়াজ শুনি। দেখি, বাড়ি থেকে মাত্র সাত ফুট দূরে ধস নেমেছে। পরে ফাটল বাড়তে থাকে।’’ শনিবার ফাটলের কথা জানা গেলেও তা খুবই ছোট আকারের ছিল। কিন্তু আতঙ্কে পাড়াশুদ্ধ লোক শনিবার রাতে ঘুমোতে পারেননি, জানান সমরবাবু। স্থানীয় বাসিন্দা মন্টু রুইদাস, লাল্টু রুইদাসেরা বলেন, ‘‘এই বুঝি ঘর, বাড়ি সব মাটিতে তলিয়ে গেল, এমন আতঙ্কে শনিবার পাড়ার লোকজন এক জোট হয়ে হ্যালোজেন জ্বালিয়ে রাত কাটিয়েছি।’’

ঘটনার খবর পেয়ে রবিবার সকালে ইসিএলের পাণ্ডবেশ্বর এরিয়ার প্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁরা ধসপ্রবণ এলাকাটি বাঁশ ও দড়ি দিয়ে ঘিরে দেন। তার পরে মাটি, বালি দিয়ে গর্ত ভরাটের কাজ শুরু হয়।

এই ঘটনার পরে এলাকাবাসী পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য লোকমান আনসারি জানান, প্রায় আড়াই দশক ধরে এই পাড়ায় অন্তত সতেরো বারেরও বেশি ধস নেমেছে। ১৯৯৮ সালে ইসিএল এই পাড়াটিকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে বলে চিহ্নিত করে।

এলাকাবাসী জানান, বছর সাতেক আগে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) প্রতিনিধিরা এলাকা সমীক্ষা করে বাসিন্দাদের সচিত্র পরিচয়পত্র দেয়। নানা সময়ে ইসিএলের বিভিন্ন দফতরে পুনর্বাসনের দাবিতে আন্দোলন করা হলেও প্রতিকার মেলেনি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সমরবাবুদের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি জামুড়িয়ায় এসে পুনর্বাসনের কাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরাও তাতে আশাবাদী। কিন্তু কবে সেই কাজ শেষ হবে, তা নিয়ে সন্দিহান এলাকাবাসীর একটা বড় অংশই।’’

আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাঙালপাড়া ধসপ্রবণ। জামুড়িয়ার বিজয়নগর ও লাগোয়া এলাকায় আবাসন দফতর আবাসন তৈরির কাজ শুরু করেছে। পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে বাঙালপাড়ার বাসিন্দাদের সেখানে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘বাঙালপাড়া ধসপ্রবণ এলাকা বলেই চিহ্নিত। পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া জোরকদমে চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Landslide Rehabilitation Pandabeswar Burdwan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE