Advertisement
E-Paper

অবৈধ খননের জেরেই রাস্তার পাশে ধস, নালিশ

এই ঘটনায় এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, ওই রাস্তার পাশেই আছে বাঁকশিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:০২
এ ভাবেই ফাটল এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই ফাটল এলাকায়। নিজস্ব চিত্র

সাতসকালে বিকট আওয়াজ। বাড়ি থেকে বেরিয়েই এলাকাবাসী দেখলেন রাস্তার পাশেই ফাটল তৈরি হয়েছে। ধসের জেরেই এই পরিস্থিতি। শুক্রবার জামুড়িয়ার শিবপুর মোড় থেকে গিরমিট যাওয়ার রাস্তায় বাঁকশিমুলিয়া গ্রামের দু’নম্বর আদিবাসীপাড়ার কাছে ধস নামে। অবৈধ খননের জেরেই এই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

এই ঘটনায় এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, ওই রাস্তার পাশেই আছে বাঁকশিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। পড়ুয়ারাও রাস্তাটি ব্যবহার করে। ধসের পরে রাত পর্যন্ত ইসিএল কর্তৃপক্ষ ফাটল ধরা জায়গাটি মাটি দিয়ে ভরাট না করায় এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধ। তাঁরা জানান, ফাটল ধরা অংশের পাশেই একটি জোড় রয়েছে। সেখানে অনেকে স্নান করতে যান। কোনও ভাবে ফাটল বাড়লে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তবে ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের বক্তব্য, ‘‘আজ, শনিবার আমরা ওই ফাটল ভরাট করব।’’

এলাকাবাসী জানান, ওই রাস্তার পাশেই রয়েছে কোড়াপাডা়, অর্জুনধাওড়া, দু’নম্বর, সাত-আট নম্বর কলোনি, লালধাওড়া, শিশুমহল্লার মতো বেশ কিছু এলাকা। অতীতেও এই এলাকায় ধস নেমেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, ২০০৫, ২০০৬ ও ২০১০-এ শিশুমহল্লা ও অর্জুনধাওড়ায় যথাক্রমে দু’বার করে চার বার রাস্তা জুড়ে ধস নেমেছিল। তা ছাড়া ২০১০ সালে পানিহাটির কাছেও ধস নেমেছিল।

বারবার ধস কেন? এলাকাবাসী জানান, অতীতে ওই এলাকায় অবৈধ খনির রমরমা ছিল। মাঝখানে কয়লার অবৈধ কারবার বন্ধ হলেও ফের নতুন করে অবৈধ খনিমুখগুলি থেকে জল তুলে ফেলে কয়লা কাটার প্রস্তুতি চলছে। আদিবাসীপাড়ার ভোলা মাঝি, শিশুমহল্লার বাসিন্দা গুপ্তেশ্বর ঠাকুরেরা জানান, পুরো এলাকায় অতীতে ইসিএলের বাঁকশিমুলিয়া সাত-আট নম্বর ভূগর্ভস্থ খনি ছিল। কিন্তু কয়লা কাটার পরে খনির নীচে ফাঁকা অংশে মাটি ভরাট না করায় মাটির উপরিভাগ জলের উপরে দাঁড়িয়ে আছে। অভিযোগ, যখনই ভূগর্ভস্থ জল তুলে ফেলা হয় তখনই এমন ধসের ঘটনা ঘটে। দিন দশেকের মধ্যে বাঁকশিমুলিয়ার রাস্তার পাশে কুয়ো খনি তৈরি করে জল তুলে ফেলার তোড়জোড় হয়েছে বলে অভিযোগ।

পরিহারপুরের বাসিন্দা আব্দুল কায়ুমের আশঙ্কা, ‘‘অবৈধ খনির রমরমা চালু হলে পুরো এলাকার ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে।’’ সিপিএম নেতা মনোজ দত্তের ক্ষোভ, ‘‘ইসিএল দায়িত্ব এড়াতে পারে না। কারণ, কয়লা কাটার পরে ওই সংস্থা জনপদের ভবিষ্যতের কথা ভাবেনি। সংস্থার উচিত, যে পরিমাণ কয়লা মাটির নীচে আছে, তা খোলমুখ খনি তৈরি করে তুলে নেওয়া। তাতে অবৈধ খনি চালু করা যাবে না।’’ কয়লার অবৈধ কারবারের অভিযোগ করেছেন নীলাদ্রিবাবুও। তবে ইসিএলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠিক নয়। বাঁকশিমুলিয়ায় রাস্তার পাশে কয়েকটি পরিত্যক্ত কুয়ো খনি ফের চালু করার জন্য পাম্পের সাহায্যে জল তোলা হচ্ছে। তাই এই ধস।’’

পুলিশ অবশ্য জানায়, অবৈধ খননের অভিযোগ পেলেই তারা অভিযানে নেমে বন্ধ করে। এ ক্ষেত্রেও অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।

জামুড়িয়া Landslide Jamuria Illegal Mining
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy