Advertisement
E-Paper

‘ফিট’ শংসাপত্র নিতে এসে ফাঁস প্রতারণা

সেচ দফতরের চাকরির জন্য কেউ দিয়েছেন দু’লাখ, তো কেউ দিয়েছেন ১৫ হাজার টাকা। হাতে নিয়োগপত্র দিয়ে বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) দফতর থেকে ‘ফিট’ শংসাপত্র নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁদের। শংসাপত্র নিতে এসে ওই চাকরিপ্রার্থীরা জানতে পারেন তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০১:০৯

সেচ দফতরের চাকরির জন্য কেউ দিয়েছেন দু’লাখ, তো কেউ দিয়েছেন ১৫ হাজার টাকা। হাতে নিয়োগপত্র দিয়ে বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) দফতর থেকে ‘ফিট’ শংসাপত্র নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁদের। শংসাপত্র নিতে এসে ওই চাকরিপ্রার্থীরা জানতে পারেন তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন এক চাকরিপ্রার্থী। বর্ধমানের সিএমওএইচ প্রণব রায়ও শংসাপত্রের চিঠিটি জাল সন্দেহে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বুধবার সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কিছু দিন আগে একই ঘটনা ঘটেছিল বিধাননগরে। অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বর্ধমানের বিষয়টি জানার পরেই নথিপত্র জোগাড় করে আমাকে দিতে বলেছি।” বর্ধমানের আইসি প্রিয়ব্রত বক্সি বলেন, “ঘটনাটির সঙ্গে বড় ধরণের প্রতারণা-চক্র জড়িয়ে রয়েছে। আমাদের ধারণা এর মধ্যে সেচ দফতরের কোনও কর্মীও জড়িয়ে থাকতে পারেন। বেশ কিছু নাম পেয়েছি। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”

পুলিশ জানিয়েছে, সেচ দফতরের চাকরিতে নিয়োগপত্র নিয়ে সিএমএওএইচ-এর দফতরে শারীরিক পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিল ৮৫ জন। গত কয়েকদিন ধরে চাকরিপ্রার্থীদের শারীরিক পরীক্ষা করে শংসাপত্রও দিয়েছে সিএমওএইচ দফতর। কিন্তু মঙ্গলবার আবেদনকারীরা সরাসরি পৌঁছে যান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায়ের কাছে। আবেদনকারীদের নিয়োগপত্র ও শারীরিক পরীক্ষার শংসাপত্র চেয়ে তাঁর কাছে যে আবেদন করা হয়েছে, তা দেখে প্রণববাবুর সন্দেহ হয়। ওই দিন বিকেলে জলসম্পদ বিভাগে ফোন করে জানতে পারেন, এ রকম নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। তখন তিনি বর্ধমান থানায় ফোন করেন।

বর্ধমান থানার পুলিশ এসে আট জন চাকরিপ্রার্থীকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদের পরে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁদের। তাঁদের মধ্যে এক জন লাউদোহা থানার কোচডিহি গ্রামের বিপ্লব যশ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগেৃ করেছেন। তাঁর দাবি, বীরভূমের বোলপুর থানার তিমির ঘোষ ও পানাগড়ের উত্তম ঘোষ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা চান। নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পরে আড়াই লক্ষ টাকা তাঁদের হাতে তুলেও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষা করাতে এসে জানতে পারলেন, তাঁর মতো অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। জানা যায়, ঝাঁঝড়া কলোনির অমিতাভ পৈতান্ডি ওই দুই ব্যক্তির হাতে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন। বীরভূমের রামপুরহাটের আসরাফ আলি খান, বীরভূমের কুসুমি গ্রামের প্রীতম দে, নদিয়ার পলাশির ইমরান শেখ, আমোদপুরের তনুশ্রী দত্তরাও প্রতারিত হয়েছেন বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছেন।

ওই চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, “নানা ধরণের কথাবার্তা বলে আমাদের ও আমাদের পরিবারকে বুঝিয়েছে প্রতারকেরা। নিয়োগপত্র দেওয়ার আগে ও পরে টাকা নেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা কাজে যোগ দেওয়ার পর নেবে বলে জানিয়েছিল।”

অভিযুক্ত পানাগড়ের উত্তম ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ না করা গেলেও বীরভূমের তিমির ঘোষ পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বর্ধমান থানা জানিয়েছে, ওই দু’জন ছাড়াও আরও বীরভূম ও নদিয়ার কয়েকজন প্রতারকের নাম পাওয়া গিয়েছে। এক জনকে ধরতে পারলেই পুরো চক্রটাকে ধরতে পারা যাবে বলেও পুলিশ আশা করছে।

Cash Job
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy