বন্ধ স্কুল। নিজস্ব চিত্র
স্কুলে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। একমাত্র অতিথি শিক্ষকও ইস্তফা পত্র জমা দিয়েছেন। উপায় না থাকায় বৃহস্পতিবার অভিভাবকদের সঙ্গে একটি সভা করে নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে আউশগ্রামের লক্ষ্মীগঞ্জ আদিবাসী জুনিয়র হাইস্কুলে পঠন পাঠন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুল বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসীর একাংশ। তাঁদের দাবি, এতে স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়বে। যদিও সভায় হাজির আউশগ্রাম ১ চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক সুমন হাম্বীরের আশ্বাস, ‘‘শিক্ষক পাওয়া গেলে ফের স্কুলে পঠন পাঠন চালু করা হবে।’’
বছর আটেক আগে চালু হওয়া ওই জুনিয়র হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হত। শুরুর কয়েক বছর অতিথি শিক্ষক থাকলেও তাঁরা অবসর নেওয়ার পরে স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষিত যুবক স্কুলে পড়াতেন। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অতিথি শিক্ষক হিসাবে ওই স্কুলে যোগ দেন। তিন শ্রেণির পড়ুয়াদের একটি ঘরে বসিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পড়াতেন তিনি। কিন্তু অবসরের বছর দেড়েক আগেই স্কুল পরিদর্শকের কাছে ইস্তফা পত্র জমা দেন মওদুদ জাহেদি নামে ওই অতিথি শিক্ষক। এর পরেই অচলাবস্থা তৈরি হয় স্কুলে। ওই শিক্ষকের দাবি, ‘‘২০১৯ সালের অগস্ট মাসে স্কুলের দ্বায়িত্ব নিই। তখন থেকে আমিই স্কুলের একমাত্র শিক্ষক। আমার পক্ষে সব শ্রেণির সব বিষয়ের পাঠ দান, অফিসের কাজকর্ম করা সম্ভব হয়ে উঠছিল না। তাই দেড় বছর কাজ বাকি থাকতেই আমি ইস্তফা দিই।’’
স্থানীয় বাসিন্দা কাকলি সরেন, জবা টুডু, লক্ষ্মী টুডু, মাকু সরেন, কাজলি হেমব্রম, তৃপ্তি মজুমদার, বুড়ো টুডুরা জানান, আগে স্কুলে প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত পড়ানো হত। পরে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হবে বলে স্কুল ভবন বাড়ানো হয়। এখন হঠাৎ জানানো হল, শিক্ষক না থাকায় স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাঁদের দাবি, ‘‘পাশের গ্রামের স্কুলে অনেকেই ছেলেমেয়েদের পাঠাতে পারবেন না। এতে স্কুলছুট বাড়বে।’’ কয়েক বছর স্থানীয় যুবকেরা স্কুলটি চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তা ফলপ্রসূ হল না, দাবি তাঁদের।
পরিদর্শক বলেন, ‘‘স্কুলে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। একমাত্র অতিথি শিক্ষকের পক্ষে স্কুলের পাঠদান, অফিসের কাজকর্মের চাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। সেই কারণে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে স্কুলটি বন্ধ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুলের ৪১ জন পড়ুয়াকে পাশের হাইস্কুলে ভর্তি করানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy