Advertisement
E-Paper

বিপদ, তবু বাস জীর্ণ আবাসনে 

খোঁজখবর নিয়ে আধিকারিকেরা কুলটির ইন্দিরা গাঁধী কলোনির এই জীর্ণ আবাসনগুলিও ভাঙার জন্য ইস্কো কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৩০
এমন আবাসনেই বসবাস। ইন্দিরা গাঁধী কলোনিতে।  নিজস্ব চিত্র

এমন আবাসনেই বসবাস। ইন্দিরা গাঁধী কলোনিতে। নিজস্ব চিত্র

ভেঙে ভেঙে পড়ছে কার্নিস। বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে রড। খসে পড়ছে ছাদের চাঙড় ও বিমের পলেস্তরা। এমনই কঙ্কালসার অবস্থা পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির ‘ইন্দিরা গাঁধী কলোনি’র আবাসনগুলির। তবুও দিনের পর দিন বিপদ মাথায় নিয়েই ওই বহুতলগুলিতে বসবাস করছেন একদল বাসিন্দা। বারবার নিষেধ করা হলেও তাঁদের হুঁশ ফিরছে না বলে অভিযোগ ইস্কোর কুলটির কারখানা কর্তৃপক্ষের।

ইস্কোর কুলটি কারখানার শ্রমিক-কর্মীদের জন্য ১৯৮০ সালে ‘ইন্দিরা গাঁধী কলোনি’ তৈরি করা হয়। গড়ে তোলা হয় তিনতলা বিশিষ্ট কয়েকশো বহুতল আবাসন। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে ইস্কোর কুলটি কারখানার সমস্ত শ্রমিক-কর্মী ‘স্বেচ্ছাবসর’ নিয়ে নেন। ফলে, কারখানায় ঝাঁপ পড়ে যায়। শ্রমিক-কর্মীদেরও পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। অধিকাংশ শ্রমিক-কর্মী আবাসন খালি করে চলে যান। অভিযোগ, পরবর্তীকালে সেগুলির দখল নেয় বহিরাগতেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, জনাকয়েক প্রাক্তন শ্রমিকও থেকে গিয়েছেন আবাসনগুলিতে। তবে একটিও আবাসন বসবাসের যোগ্য নয়। যে কোনও দিনই ধসে পড়তে পারে বহুতলগুলি। আবাসনের বাসিন্দা শ্যামল গোপ বলেন, ‘‘খুবই ভয়ে আছি। কিন্তু কোনও উপায় নেই বলে এখানে পড়ে আছি।’’ আর কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই পাননি বলে দাবি শর্মিলা তিওয়ারির। তিনি জানালেন, বছর কয়েক আগে পেশায় দিনমজুর তাঁর স্বামী পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে তাই এই বিনা ভাড়ার আবাসনে এসে উঠেছেন। বিপদ যে রয়েছে তা বিলক্ষণ জানেন শর্মিলাদেবীও। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও সময়ে ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু এ ছাড়া ,উপায় নেই।’’

বছরখানেক আগে আসানসোল পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় থাকা জীর্ণ আবাসনগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশিকা জারি করেছিলেন পুর-কর্তৃপক্ষ। খোঁজখবর নিয়ে আধিকারিকেরা কুলটির ইন্দিরা গাঁধী কলোনির এই জীর্ণ আবাসনগুলিও ভাঙার জন্য ইস্কো কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছেন। কিন্তু এখনও আবাসনগুলি ভাঙা হয়নি।

তবে ইস্কো কর্তৃপক্ষের দাবি, আবাসনগুলির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কুলটি কারখানার জিএম চন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘আবাসনগুলি থেকে বহিরাগতদের বার করে দিয়ে সেখানে বড় হরফে পরিত্যক্ত বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও লুকিয়ে-চুরিয়ে কেউ কেউ ঢুকে পড়েছেন।’’ ইস্কোর আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, দ্রুত বিশেষ অভিযান চালিয়ে আবাসন খালি করা হবে হবে। কিন্তু এগুলি ভেঙে ফেলা হচ্ছে না কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই পরিত্যক্ত আবাসনগুলি ভাঙার জন্য খরচের টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।

এ দিকে আসানসোল পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটার আগে ইস্কো কর্তৃপক্ষের ইতিবাচক পদক্ষেপ করা উচিত। খোঁজ নিয়ে দেখছি, কী করা যায়।’’

Dilapidated Housing life risk Kulti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy