Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Bardhaman

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দুগাছ, পাতা না মেলায় রোজগারে টান পড়েছে, দাবি

শালপাতা হোক বা শুকনো কাঠ— জঙ্গল থেকে নানা সামগ্রী সংগ্রহ করে জীবনধারণ করেন কাঁকসার জঙ্গলঘেঁষা গ্রামের বহু মানুষ।

দোমড়ায় জঙ্গল থেকে কেন্দু পাতা নিয়ে বাড়ির পথে।

দোমড়ায় জঙ্গল থেকে কেন্দু পাতা নিয়ে বাড়ির পথে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ০৬:১২
Share: Save:

গত মাসে কাঁকসার একাধিক জঙ্গলে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে কেন্দু গাছের। যাঁরা এই সময় কেন্দুপাতা সংগ্রহ করে বিক্রি করেন, টান পড়েছে তাঁদের রোজগারে।

শালপাতা হোক বা শুকনো কাঠ— জঙ্গল থেকে নানা সামগ্রী সংগ্রহ করে জীবনধারণ করেন কাঁকসার জঙ্গলঘেঁষা গ্রামের বহু মানুষ। এ সব বনজ সম্পদই তাঁদের রোজগারের পথ দেখায়। বছরের এই সময় শালপাতার পাশাপাশি, কেন্দু পাতা সংগ্রহ করে বিক্রি করেন তাঁরা। কাঁকসার জঙ্গলে কেন্দুগাছের সংখ্যা বেশি। তাই কেন্দুপাতা সহজলভ্য।

বসন্তে পাতা ঝরে। গ্রীষ্মে নতুন পাতা গজায়। এই সময় জঙ্গলে মেলে মহুয়া ফল, শাল ও কেন্দুপাতা। ভোর থেকে তা সংগ্রহে ব্যস্ত থাকেন জঙ্গলবাসী। কাঁকসার গোপালপুর এলাকায় রয়েছে বহু বিড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা। গোপালপুর গ্রামের একাংশে প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই বিড়ি তৈরি হয়। তার জন্য প্রয়োজন কেন্দুপাতার।

ত্রিলোকচন্দ্রপুর, সুন্দিয়ারা, দোমড়া, রক্ষিতপুর, জামডোবা এলাকার মানুষ জঙ্গল থেকে কেন্দুপাতা সংগ্রহ করেন। ওই সব গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের এলাকায় বোরো ধানের চাষ তেমন হয় না। মাঠে কাজও খুব একটা জোটে না। রোজগারের ‘পরিসর’ কমেছে। বিড়ির পাতার চাহিদা থাকায় প্রায় প্রত্যেক পরিবারের কোনও না কোনও মহিলা জঙ্গলে গিয়ে কেন্দুপাতা সংগ্রহ করেন।

ভোরে দল বেঁধে কেন্দুপাতা সংগ্রহের কাজে যান তাঁরা। ফেরেন দুপুরের মধ্যে। ওই সব মহিলারা জানান, কাঁকসায় বেশ কয়েকটি বড় জঙ্গল রয়েছে। সে সব জঙ্গলে কেন্দুগাছের সংখ্যা অনেক। গাছগুলির উচ্চতা খুব বেশি না হওয়ায় পাতা সহজেই তোলা যায়। কিন্তু এ বছর এখনও পর্যন্ত গাছে পাতার সংখ্যা খুবই কম। পরপর বেশ কয়েকটি জঙ্গলে আগুন লাগায় কেন্দু গাছের ক্ষতি হয়েছে। গাছ থেকে পাতা মিলছে না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মার্চের বিভিন্ন সময় চারের মাইল জঙ্গল, গড় জঙ্গল, ত্রিলোকচন্দ্রপুরের জঙ্গলে আগুন লেগেছে। সে সব জঙ্গলে কেন্দুগাছের সংখ্যা বেশি। কাঁকসার সুন্দিয়ারার শ্যামলী বাউরি, কনিকা বাগদিরা বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছরই এই সময় এক দিনে পাতা বিক্রি করে ১০০-১৫০ টাকা উপার্জন হয়। কিন্তু এ বছর দিনে একশো টাকাও মিলছে না।’’

ডিএফও (বর্ধমান) নিশা গোস্বামী বলেন, ‘‘জঙ্গলে আগুন লাগলে সকলেরই যে ক্ষতি হয়, তা মানুষকে বুঝিয়েছি। কাজও হয়েছে। জঙ্গলে আগুন লাগানোর ঘটনা কমেছে। আগের তুলনায় সচেতনতা বেড়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE