মাদক খাইয়ে খুন করার পরে মুখটা পুড়িয়ে দিয়েছিলেন খুনি। পকেটে গুঁজে দিয়েছিলেন নিজের ভোটার কার্ড। নিহতকে পরিয়ে দিয়েছিলেন নিজের পোশাক। যাতে দেহ শনাক্ত হলে সবাই ভাবে এটা তিনি। আর জীবনবিমার মৃত্যুকালীন মোটা অঙ্কের টাকাটাও পকেটে ঢোকে। যদিও পুলিশের চোখে ধুলো দিতে পারেননি। সোমবার এই খুনের ঘটনাতেই তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক।
কালনা ফাস্ট ট্রাক আদালতের বিচারক বিবেকানন্দ সূর হুগলির জিরাট অফিস পাড়ার বাসিন্দা অভিজিৎ দে-কে খুনের দায়ে এই সাজা দেন। এ ছাড়াও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছ’মাসের জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দয়াল দাস মজুমদার, রুইদাস মজুমদার ও সুমন বিশ্বাস নামে ওই তিন জনকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ ভোরে পূর্বস্থলীর বিশ্বরম্ভা এলাকায় এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখে অবিনাশ রায় নামে স্থানীয় এক যুবক। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে দেখে, মুখটি বিকৃত। ময়না-তদন্তে পাঠানোর পরে মৃত যুবকের গেঞ্জির পকেট থেকে দয়াল দাস মজুমদার নামে একটি ভোটার কার্ডের ফটোকপি উদ্ধার হয়। দেখা যায়, কাগজের উল্টো দিকে একটি ফোন নম্বরও রয়েছে। পুলিশ ফোন করলে ফোন ধরেন রুইদাস মজুমদার নামে এক যুবক। হাসপাতালের এসে তিনি দাবি করেন, তাঁদের বাড়ি কাটোয়ার চরপাতাইহাট এলাকায়। দেহটি তাঁর দাদার। দেহ নিয়ে চলেও যান তিনি। তবে তাঁদের কথাবার্তায় সন্দেহ হয় পুলিশের। ওই এলাকায় তদন্তে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, দীর্ঘদিন আগেই দয়ালরা ওই এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। মৃতদেহের ছবি দেখেও চিনতে পারেননি কেউ। এরপরেই পুলিশ রুইদাসকে ধরে।