চা খেতে গিয়ে একটা বিস্কুট খেয়েছিলেন। কিন্তু বিস্কুটের স্বাদ ভাল না লাগায় চায়ের দোকানদারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এক খদ্দেরের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার খালেরপুল এলাকায়। বুধবার প্রহৃত দোকানদার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পরে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম ফরিদ আলি শেখ। ৫০ বছরের ওই চা দোকানির বাড়ি রায়নার মাছখান্ডা গ্রামে। খালেরপুল এলাকায় রয়েছে তাঁর চায়ের দোকান। প্রতিদিন সকালের মতো মঙ্গলবারও কয়েক জন চেনা খদ্দের ওই চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। সেখানে চা খেতে যান বেলসরের বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি হোসেন মোল্লা। তিনিও চেনা খদ্দের।
জানা গিয়েছে, ফরিদের কাছে চায়ের সঙ্গে একটি বিস্কুট খেতে চান তিনি। কথা মতো একটি বিস্কুট দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু বিস্কুটে কামড় দিয়ে দোকানদারের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে দেন রাজমিস্ত্রি। তাঁর অভিযোগ, বিস্কুটের স্বাদ খারপ। সামান্য বিষয় নিয়ে বচসা চলে বেশ কিছু ক্ষণ। অন্যান্য খদ্দেরের মধ্যস্থতায় তখনকার মতো মিটমাটও হয়ে যায়।
কিন্তু কিছু ক্ষণ পর আবার চায়ের দোকানে যান হোসেন। এ বার তাঁর হাতে ছিল বাঁশের লাঠি। কিছু বোঝার আগেই চা দোকানিকে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন বলে অভিযোগ।
পরে রক্তাক্ত ফরিদকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আবার স্থানান্তর করা হয়েছিল নবাবহাটের কাছে একটি হাসপাতালে। সেখানেই বুধবার ভোরে মৃত্যু হয়েছে চা দোকানির।
আরও পড়ুন:
মৃতের পুত্র শেখ সৈয়দ আহমেদ বলেন, ‘‘প্রায় প্রতিদিন সকালে বাবার কাছে (দোকানে) চা খেত হোসেন মোল্লা। কিন্তু চায়ের টাকা দিত না। নানা কারণ দেখিয়ে চলে যেত। মঙ্গলবার সকালেও চা খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যায়। তখন টাকা চাইতে বিস্কুট নিয়ে অশান্তি করে। স্থানীয়েরা ঝামেলা মিটিয়ে দেন। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরে বাঁশ নিয়ে এসে বাবার মাথায় মারে ও।’’
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে রাজমিস্ত্রি হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশিই মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। হিজলনা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ আইনাল বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে চায়ের দোকান করে সংসার চালাত ফরিদ আলি। মঙ্গলবার সকালে নিজের দোকানেই প্রহৃত হয় সে। মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হল ওর। দোষীর কঠোর শাস্তি হোক।’’