Advertisement
E-Paper

‘হলদিবাড়ি এক্সপ্রেস চললে ওকে হারাতাম না!’ স্ত্রীর দেহ নিয়ে বিড়বিড় করলেন বর্ধমানের হাসমত শেখ

মেয়ের বিয়ের পর বিউটি স্বামীর কাছে গিয়েছিলেন। হাসমত শিলিগুড়িতে ঘরভাড়া করে থাকেন। একটি বেসরকারি সংস্থায় তিনি কর্মরত। সোমবার বাড়ি ফেরার জন্য কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন বিউটি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ২৩:০৩
death in Kanchanjunga express accident

(বাঁ দিকে) দুর্ঘটনার পর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। মৃতা বিউটি বেগম শেখ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

জুন থেকে জুন। এক বছর আগে করমণ্ডল দুর্ঘটনার স্মৃতি ফিরল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায়। মালগাড়ি এবং এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ন’জনের প্রাণহানির খবর মিলেছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরের এক বাসিন্দা। মৃতার নাম বিউটি বেগম শেখ। স্বামী কর্মসূত্রে শিলিগুড়িতে থাকেন। সেখান থেকেই সোমবার শ্বশুরবাড়ি ফিরছিলেন ওই বধূ। ইতিমধ্যে স্ত্রীর দেহ শনাক্ত করেছেন হাসমত শেখ। ময়নাতদন্তের পর দেহ আনা হচ্ছে গুসকরায়। এই খবরে শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গুসকরা শহরের ইটাচাঁদার বাসিন্দা হাসমত এবং বিউটির দুই সন্তান। ছেলে বিশাল শেখ কর্মসূত্রে থাকেন কেরলে। মেয়ে সুনয়নী খাতুনের বিয়ে হয়েছে মাত্র এক মাস আগে।

মেয়ের বিয়ের পর বিউটি স্বামীর কাছে গিয়েছিলেন। হাসমত শিলিগুড়িতে ঘরভাড়া করে থাকেন। একটি বেসরকারি সংস্থায় তিনি কর্মরত। সোমবার বাড়ি ফেরার জন্য কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন বিউটি। তার পরেই এই দুর্ঘটনা। স্ত্রীর দেহ শনাক্ত করার পর হাসমত বলেন, ‘‘সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ছাড়তে এসেছিলাম ওকে। কথা ছিল হলদিবাড়ি এক্সপ্রেস ধরার। কিন্তু, পরে জানতে পারি ওই ট্রেনটি আজ ছিল না। তাই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে টিকিট করে দিয়েছিলাম...’’ একটু থেমে হাসমত আবার বলেন, ‘‘ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নাগাড়ে স্ত্রীকে ফোন করছিলাম। কিন্তু, সুইচ্‌ড অফ বলছিল। আর দেরি না করে দুপুরে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে আসি। স্ত্রীর ছবি দেখাই সবাইকে। তার পর শোয়ানো দেহগুলোর কাছে গিয়ে স্ত্রীকে পেলাম... মৃত অবস্থায়।’’

কান্নায় গলা ধরে আসছিল হাসমতের। তিনি বলেন, ‘‘ভোরে ঘুম থেকে উঠে আমার জন্য রান্না করে তার পর বেরিয়েছিল। কিন্তু নিজে কিছু খেল না। স্টেশনে এসে ফল আর বিস্কুট কিনে ওর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলাম।’’ আফসোস করে ওঠেন প্রৌঢ়। বলেন, ‘‘হলদিবাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটা থাকলে স্ত্রীকে এ ভাবে হারাতে হত না।’’

গুসকরার বাড়িতে বিউটির মৃত্যুসংবাদ এসে পৌঁছয় দুপুরে। মৃতার মেয়ে বলেন, ‘‘মায়ের সঙ্গে শেষ বার কথা হয়েছিল ফোনে। বলেছিল, শেষের দিকের কামরায় উঠেছে। তার পর আর যোগাযোগ করতে পারিনি। তার পর জানলাম, মা আর নেই!’’

ইদের দিনে এমন ঘটনায় শোকে মুহ্যমান হাসমতের পরিবার-পরিজন। গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা খবর পেয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলাম। দেহ সৎকারের সব রকম ব্যবস্থা করা হবে। আমরা পরিবারের পাশে আছি।’’

Kanchanjunga Express Accident Death Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy