E-Paper

লক্ষ্মীপুজোর বাজারে হিমশিম মধ্যবিত্ত

শহরের আনাজ বিক্রেতা ধ্রুব দাস বলেন চাহিদার তুলনায় জোগান অনেকটাই কম রয়েছে। ফলে আনাজের দাম কিছুটা বেশি রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:২০
কালনায় ভরা ফলের দোকান।

কালনায় ভরা ফলের দোকান। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল 

রাত পোহালেই লক্ষ্মী পুজো। দেবীকে ফল, মিষ্টি, আনাজ-সহ নৈবদ্য সাজিয়ে দেওয়ার রীতি রয়েছে ঘরে ঘরে। কিন্তু পুজোর আয়োজন করতে গিয়ে কার্যত নাভিশ্বাস অবস্থা মধ্যবিত্ত বাঙালির। ক্রেতাদের দাবি, কালনার বাজারগুলিতে দুর্গা পুজোর সময় থেকেই ফুল, ফল, আনাজের দাম একটু চড়া ছিল। লক্ষ্মীপুজোর জন্য চাহিদা বৃদ্ধি পেতেই চড়চড়িয়ে বেড়েছে দাম। গ্রামাঞ্চলে অনেক বাড়িতে লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে নিমন্ত্রণ থাকে পরিচিতদের। তবে ১০০ দিনের কাজ না থাকা, পাটের লাভজনক দর না পাওয়া-সহ নানা কারণে নগদের টান রয়েছে গ্রামবাসীদের হাতে। সব মিলিয়ে লক্ষ্মীপুজোর বাজার সারতে কালঘাম ছুটছে গৃহস্থের।

চকবাজার-সহ বিভিন্ন খোলা বাজারে বৃহস্পতিবার কেজি প্রতি পটল ৪০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, সিম ১০০ টাকা, ডাঁটা ২৫০ টাকা, বিট ৬০ টাকা, গাজর ৭০ টাকা, লঙ্কা ১০০ টাকা, মটরশুঁটি ২৫০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা, বিনস ২০০ টাকা, কচু ৪০ টাকা, ধনেপাতা ১৫০ টাকা, কুমড়ো ২৫ টাকা, ক্যাপসিকাম ১২০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ঝিঙে ৩০-৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৫০-৬০ টাকা, জ্যোতি আলু ১৭ টাকা, চন্দ্রমুখী ২৫ টাকা, আদা ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পিস প্রতি ফুলকপি ৩০-৪০ ও লাউ ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

শহরের আনাজ বিক্রেতা ধ্রুব দাস বলেন চাহিদার তুলনায় জোগান অনেকটাই কম রয়েছে। ফলে আনাজের দাম কিছুটা বেশি রয়েছে। তাই ক্রেতাদের একাংশ আনাজ কম পরিমাণে কিনছেন। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কালেখাঁতলা বাজারের এক আড়তদার খুদিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘পুজোর আগে লাগাতার বৃষ্টির কারণে প্রচুর আনাজ নষ্ট হয়েছে। তাই আনাজের জোগান লক্ষ্মী পুজোর চাহিদার তুলনায় অনেকটাই কম। চাষিরা যেটুকু আনাজ আনছেন, তা এলাকার বাজারগুলিতেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।’’

এদিন পুজোর কেনাকাটা করতে এসেছিলেন কালনার পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা সুফল দেবনাথ। তিনি বলেন, ‘‘দেবীর মূর্তি থেকে শুরু করে পুজোর সমস্ত জিনিসের দাম এবার আগুন। তার মধ্যেই যতটা পারছি ধীরে ধীরে কেনাকাটা করছি।’’

পুজোর আগে চড়তে শুরু করেছে ফলের দামও। এদিন বিভিন্ন বাজারে নারকেল বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকা দরে। আপেল কেজি প্রতি ১০০-১৩০ টাকা, ন্যাসপাতি ২০০-৩০০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, পেয়ারা ৩০-৫০ টাকা, পানিফল ৫০ টাকা, বেদানা ২৫০ টাকা, খেজুর ১৫০ টাকা, আঙুর ২৫০-৪৫০ টাকা, শাঁকালু ১০০ টাকা, রাঙাআলু ৬০ টাকা, পাকা পেঁপে ৮০-১০০ টাকা, আতা ২৫০ টাকা, তরমুজ ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ডজন প্রতি কলার দর ছিল ৭০-৯০ টাকা। পিস প্রতি মুসম্বি ১০-১৫ টাকা, কমলালেবু ১৫ টাকা, আখ ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

ফল ব্যবসায়ী যাদব সাহা বলেন, ‘‘কিছু কিছু ফলের দাম বেড়েছে। খরিদ্দারেরা লক্ষ্মী পুজোর কেনাকাটা শুরু করায় বিক্রি ভালই হয়েছে। আজ ভিড় আরও বাড়বে বলে আশা করছি।’’

লক্ষ্মী পুজোয় বিপুল চাহিদা থাকে মিষ্টির। নিভুজিমোড় এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবরাজ বারুই বলেন, ‘‘ছানা, দুধের বাজার চড়া। তবুও সাধারণ মানুষের কেনাকাটার ক্ষমতা মাথায় রেখেই বাড়ানো হয় মিষ্টির দাম। প্রচুর রসগোল্লা, পান্তুয়ার পাশাপাশি লক্ষ্মীপুজোয় কলাইয়ের ডালের জিলিপিও তৈরি করা হচ্ছে।’’

এদিন পুজোর কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরছিলেন কালনা ২ ব্লকের বাসিন্দা পুতুল কর্মকার, সীমা দেবনাথ। তাঁরা বলেন, ‘‘গতবারের চেয়ে জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ছোট্ট লক্ষ্মীর মূর্তি কিনতে গেলেও লাগছে ১৫০-২০০ টাকা। সব থেকে বেশি দাম অনাজের। বাজেট বেড়ে যাওয়ার কারণে আনাজ, মিষ্টি গতবারের থেকে কম পরিমাণে কিনতে বাধ্য হচ্ছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

high price Kalna

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy