Advertisement
E-Paper

মা-দাদা জোর করে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে, পুলিশের দ্বারস্থ কিশোরী

বিয়েবাড়ি আত্মীয়-স্বজনে ভর্তি। তত্ত্বও এসে গিয়েছে। তার মধ্যেই সুযোগ খুঁজে পালাল ১৪ বছরের ‘পাত্রী’। সোজা পুলিশের কাছে গিয়ে জোড়-হাতে তার আর্তি, ‘‘কাকু, মা-দাদা জোর করে আমার বিয়ে দিচ্ছে! কিছু একটা করুন।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪২

বিয়েবাড়ি আত্মীয়-স্বজনে ভর্তি। তত্ত্বও এসে গিয়েছে। তার মধ্যেই সুযোগ খুঁজে পালাল ১৪ বছরের ‘পাত্রী’। সোজা পুলিশের কাছে গিয়ে জোড়-হাতে তার আর্তি, ‘‘কাকু, মা-দাদা জোর করে আমার বিয়ে দিচ্ছে! কিছু একটা করুন।’’

শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর ওই আবেদনে প্রথমে চমকে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা ফাঁড়ির কর্তব্যরত অফিসার। পরে জোর করে নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে শুনে আউশগ্রাম ১-এর বিডিও চিত্তজিৎ বসুকে বিষয়টি জানান। বিডিও-র নির্দেশে পুলিশ ছোটে গুসকরার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মুচিপাড়ায়, ওই নাবালিকার বাড়িতে। পড়শিরা জানান, মেয়েটির বাবা বছর দশেক আগে মারা গিয়েছেন। মা গীতা দাস পেশায় পরিচারিকা। দাদা ভিন্-রাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। পুলিশ আসার খবর পেয়েই পালিয়ে যান পাত্রপক্ষের লোকেরা।

গীতাদেবীকে বিডিও-র কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতি, অভাবের সংসারে মেয়েকে পড়াতে না পারার যুক্তি দিলেও আধিকারিকেরা বোঝানোর পরে সুর নরম করেন গীতাদেবী। আঠারো বছর হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দেন তিনি।

ওই নাবালিকা জানায়, আজ, রবিবার বোলপুরের এক পাত্রের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করেছিলেন মা ও দাদা। অথচ, স্কুলে যেতে, পড়তে খুব ভাল লাগে তার। শিক্ষিকারাও অনেকবার বুঝিয়েছেন, নাবালিকা হলে বিয়ে করা বেআইনি।

শুক্রবার রাতে গায়ে হলুদের তত্ত্ব নিয়ে এসে পড়েন পাত্রের বাড়ির লোকেরা। ঘুম ওড়ে মেয়ের। তার কথায়, ‘‘সারা রাত ভেবে ঠিক করি, থানায় যাব। পুলিশ নিশ্চয় সাহায্য করবে।’’

নাবালিকা বিবাহ আটকানো এবং গরিব ঘরের মেয়েদের পড়াশোনা শিখিয়ে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছেন। স্কুলে-স্কুলে কমবয়সে বিয়ের শরীরে-মনে কুপ্রভাব নিয়ে তথ্যচিত্র দেখিয়ে, ‘কন্যাশ্রী ক্লাব’ গড়ে সচেতনতার পাঠ দেওয়া হচ্ছে ছাত্রীদের। ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের জেলা আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরীর অবশ্য আশা, সচেতনতা-প্রচারে কাজ হবে।

মেয়েটিকে পড়াশোনায় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও। তিনি বলেন, “ওকে সামনে রেখে নাবালিকা বিয়ের বিরুদ্ধে এলাকায় প্রচার চালাব।’’ স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর মনোজ সাউ বলেন, “মেয়েটা শুধু নিজের বিয়ে রুখল না, অনেক অভিভাবককে সতর্ক এবং সজাগও করে দিল।”

Minor girl marriage Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy