Advertisement
E-Paper

মেয়ে জঙ্গলে! জেনে স্ত্রীকে চড়

দুর্গাপুরের ওই বধূ সোমবারই স্বীকার করেছেন, দ্বিতীয়বার মেয়ে হওয়া তিনি মেনে নিতে পারেননি। তার উপরে শিশুকন্যার ডান পায়ে টিউমার। যা নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ১৩:০০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সাত মাসের মেয়েকে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে এসেছিলেন মা। মেয়ে বরাতজোরে বেঁচে যায়। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিজের মেয়ের কাছে এসেও তার থেকে মানসিক ভাবে দূরেই ছিলেন জন্মদাত্রী। ধীরে ধীরে অবশ্য স্নেহের টান তৈরি হচ্ছে।

বাঁকুড়া চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর সজল শীল বলেন, “প্রথমে বাচ্চাটিকে কোলেও নিতে চাইতেন না। তবে এই ক’দিনে অবস্থা অনেকটা পাল্টেছে। এখন বাচ্চাকে ছেড়ে ওয়ার্ডের বাইরেও বেশ একটা যেতে চাইছেন না তিনি।’’

দুর্গাপুরের ওই বধূ সোমবারই স্বীকার করেছেন, দ্বিতীয়বার মেয়ে হওয়া তিনি মেনে নিতে পারেননি। তার উপরে শিশুকন্যার ডান পায়ে টিউমার। যা নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা। এ সবের জেরেই মেয়েকে ১০ জুলাই হাসপাতাল থেকে ছুটি করিয়ে রাতে ওন্দার আমড়াতলা জঙ্গলে ফেলে এসেছিলেন ওই বধূ। শ্বশুরবাড়িতে জানিয়েছিলেন, মেয়ে মারা গিয়েছে।

মঙ্গলবার দুর্গাপুরের নিজেদের বাড়িতে বসে ওই বধূর স্বামী দাবি করলেন, তাঁর স্ত্রীর কাণ্ড জেনে তাঁরাও স্তম্ভিত। বছর ছয়েক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। দিন কুড়ি আগে ছোট মেয়ের পায়ে পুঁজ জমে যাওয়ায় চিকিৎসার জন্য তিনি ও তাঁর স্ত্রী তাকে নিয়ে যান বাঁকুড়া মেডিক্যালে। স্ত্রী সেখানে রয়ে যান। ১০ তারিখ দুপুর আড়াইটে ফোনে স্ত্রী তাঁকে জানান, অস্ত্রোপচারের সময় মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। ওখানেই দেহ পুঁতে সৎকার করে তিনি বাড়ি ফিরছেন।

শিশুকন্যাটির বাবা, পেশায় দুধ বিক্রেতা বলেন, ‘‘১১ তারিখ বিকেলেই নিজের দিদিমা, মা, দাদা ও জামাইবাবুর সঙ্গে আমার স্ত্রী দুর্গাপুরে ফেরে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সবাই আমাদের এখানেই ছিল। সে দিনই দুপুরে বাঁকুড়া থেকে ফোন আসে, পায়ে ক্ষত থাকা একটি শিশুকন্যা উদ্ধার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি, এ তো আমারই মেয়ে!’’ চেপে ধরতে স্ত্রী সব বলে দেন। ‘‘শুনে মাথার ঠিক রাখতে পারিনি। হাসপাতালেই ওকে চড় মেরে দিই!’’—বললেন ওই যুবক।

শুক্রবার বিকেলে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। ফোনে নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন। মেয়ের পায়ের হাল নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় তিনি। এখন অবশ্য স্ত্রীর পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। বলছেন, ‘‘অসুস্থ মেয়ের পা কেটে বাদ দিলে বাকি জীবন কী ভাবে কাটবে, তা ভেবে মাথার ঠিক ছিল না ওর। তাই করে ফেলেছে।’’ তাঁর আরও দাবি, এ বার ছেলে হলে ভাল লাগত ঠিকই। তবে মেয়ে হওয়া নিয়ে তাঁর বা তাঁর পরিবারের আপত্তি ছিল না। পড়শিরাও জানাচ্ছেন, ওই পরিবারে ছেলে নেই বলে অশান্তি ছিল না।

ওই বধূও বলছেন, “ঝোঁকের মাথায় কাজটা করে ফেলেছিলাম। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি।’’

Bizzare Mother Inhumanity বাঁকুড়া চাইল্ড লাইন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy