E-Paper

ডেঙ্গি আক্রান্ত দুই, জানেই না পুরসভা

ডেঙ্গি-প্রতিরোধ প্রতিরোধ কর্মসূচিতে বর্ধমান পুরসভার ভূমিকা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর ক্ষুব্ধ। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, বর্ধমান পুরসভায় ঠিকমতো আবর্জনা পরিষ্কার যেমন হয় না, তেমনই নিবিড় ভাবে বাড়ি বাড়ি অভিযানও চালান না স্বাস্থ্যকর্মীরা।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:২১
Share
Save

শহরের মিঠাপুকুরে একই পরিবারের দু’জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে খোসবাগানের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। অথচ পুরসভার কাছে কোনও খবর নেই। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন স্থানীয় পুর-প্রতিনিধি, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুশান্ত প্রামাণিক। সোমবার সকালে তিনি সদলবলে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সচেতন করতে ও এলাকা পরিচ্ছন্ন করার কাজে বেরিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “আমি পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান-ইন কাউন্সিল। অথচ পুরসভার কাছে আমার ওয়ার্ডের দু’জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, এমন কোনও খবর দেওয়া হয়নি। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি মশা মারার স্প্রে, ব্লিচিং দেওয়ার কাজ করলাম। আমার নয়, এলাকার বাসিন্দারাই আমাকে ঘিরে পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখালেন।”

ডেঙ্গি-প্রতিরোধ প্রতিরোধ কর্মসূচিতে বর্ধমান পুরসভার ভূমিকা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর ক্ষুব্ধ। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, বর্ধমান পুরসভায় ঠিকমতো আবর্জনা পরিষ্কার যেমন হয় না, তেমনই নিবিড় ভাবে বাড়ি বাড়ি অভিযানও চালান না স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার দাবি, ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্যেও পুরসভার ‘গড়মিল’ নজরে এসেছে। জেলা পরিষদের তরফে মৌখিক অভিযোগও জানানো হয়েছে। কী অভিযোগ? স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, গ্রামের কোনও স্থায়ী বাসিন্দা কর্মসূত্রে বর্ধমান শহরে থাকেন। তিনি কোনও কারণে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে তাঁর বর্তমান ঠিকানার বদলে স্থায়ী ঠিকানা লিখে স্বাস্থ্য দফতরে জমা দেওয়া হচ্ছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট গ্রামে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যাচ্ছে, ডেঙ্গি আক্রান্ত ব্যক্তিরা গত কয়েক মাস বা কয়েক বছর গ্রামের বাড়িতেই পা রাখেননি। ফলে ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি হচ্ছে।

মিঠাপুকুরের ঘটনাও সেই বিভ্রান্তিকেই সামনে এনেছে বলে মনে করছেন অনেকে। নিয়ম হল, ডেঙ্গি আক্রান্ত হলেই সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরি নির্দিষ্ট পোর্টালে তা অন্তর্ভুক্ত করবে। কিন্তু মিঠাপুকুরের একই পরিবারের দু’জন (শাশুড়ি ও তাঁর পুত্রবধূ) ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েক দিন নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। সেই তথ্য পুরসভার কাছে নেই। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, “ডেঙ্গি-তথ্য পোর্টালে আপলোড করতে বাধ্য। ছুটি থাকায় কী হয়েছে, এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে তথ্য না দিয়ে থাকলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।” এ দিন সকালে সুশান্ত ব্লিচিং, স্প্রে নিয়ে বেরোলে তাঁকে ঘিরে ক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীর একাংশ। পুরসভা কেন ডেঙ্গি-প্রতিরোধে কোনও ভূমিকা নিচ্ছে না, সে প্রশ্নও তোলেন তাঁরা।

সুশান্তর দাবি, “২৯ নম্বর ওয়ার্ডে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুরসভাকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও জবাব পাইনি। আমি স্বাস্থ্য দফতরের চেয়ারম্যান-ইন কাউন্সিল হয়ে একেবারেই চুপ করে বসে থাকতে পারি না। এলাকাবাসীর ক্ষোভের সঙ্গত কারণ রয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman Dengue Dengue Fear

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy