Advertisement
E-Paper

রাজস্ব গেল কোথায়, শুরু তদন্ত

 বেআইনি হোর্ডিং-ব্যানার নিয়ে নাজেহাল দুর্গাপুর পুরসভা। কোষাগারে রাজস্ব ঢোকে না। অথচ শহরের মুখ ঢেকে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনে। ফলে কয়েক কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুরসভা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:১১
এমন সব হোর্ডিং নিয়ে বিপাকে পুরসভা। নিজস্ব চিত্র

এমন সব হোর্ডিং নিয়ে বিপাকে পুরসভা। নিজস্ব চিত্র

বেআইনি হোর্ডিং-ব্যানার নিয়ে নাজেহাল দুর্গাপুর পুরসভা। কোষাগারে রাজস্ব ঢোকে না। অথচ শহরের মুখ ঢেকে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনে। ফলে কয়েক কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুরসভা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

দুর্গাপুর পুর-এলাকায় বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে অনিয়ম লেগেই আছে বছরের পর বছর ধরে। ২০১১ সালে রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) চলে যায় তৃণমূলের হাতে। ২০১২ সাল পর্যন্ত দুর্গাপুর পুরসভা বামেদের দখলেই ছিল। সেই সময় তৃণমূলের পক্ষ থেকে হোর্ডিং নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের নির্দেশে এডিডিএ সব হোর্ডিং সরিয়ে দেয়। পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেও আবার হোর্ডিং নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে পুরসভার পক্ষ থেকে কড়াকড়ি শুরু হওয়ায় সাময়িক বিতর্ক মেটে।

এ বছর নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে ফের বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে ‘জলঘোলা’ শুরু হয়। শহরের সর্বত্র নানা বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং-ব্যানারের রমরমা। অথচ পুরসভার হাতে বিজ্ঞাপন বাবদ রাজস্ব তেমন ঢোকে না। বিশেষ করে সিটি সেন্টার এলাকা বড় বড় হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, শাসকদলের একাংশের মদতেই বেআইনি হোর্ডিংয়ের রমরমা কারবার চলছে শহর জুড়ে। পুরসভার প্রাথমিক হিসেবে গরমিলের পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে গরমিল শুরু হয়েছে। তার পর থেকেই আর পুরসভার ঘরে রাজস্ব ঢোকেনি বলে পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় আড়াই কোটি টাকার গরমিল ধরা পড়েছে। তা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন পুরসভার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আর রেয়াত করা হবে না। সে জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি পুরো বিষয় খতিয়ে দেখবে। কার কাছে কত টাকা বকেয়া আছে, কোথায় কত গরমিল, কে বা কারা এ সব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত—সব খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হবে কমিটিকে।

মেয়র পারিষদ (সড়ক) অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলবে কমিটি। এই কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন পুরসভার অর্থ আধিকারিক, আর এক মেয়র পারিষদ রুমা পাড়িয়াল, ৩ নম্বর বরো চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার ও কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই। কাল, সোমবার থেকে কমিটি দায়িত্ব নেবে। তিন সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় শাসকদলের নেতাদের কেউ একজন হোর্ডিং লাগানোর বিষয়টি দেখাশোনা করে থাকেন। তিনি চাইলেই সংস্থাগুলি সেখানে হোর্ডিং লাগাতে পারে। পুরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। এর জেরে পুরসভা রাজস্ব হারায়। পকেট ভরে ওই নেতার। অন্য দিকে সংস্থাগুলিও কম ভাড়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে মুনাফা লুটে। পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, ‘‘এ সব আর চলবে না। যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখবে কমিটি। রিপোর্ট পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের কেউ অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাঁকেও ছাড়া হবে না।’’

Durgapur Municipal Corporation Hoarding
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy