দু’মাস আগে নিখোঁজ হন হুগলির এক যুবক। বলাগড় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে তাঁর পরিবার। কিন্ত কোনও খোঁজ মেলেনি। এরই মাঝে রবিবার পূর্ব বর্ধমানের কালনার রাজবংশী পাড়ার ঝোপজঙ্গল ঘেরা জলাজমি থেকে উদ্ধার হয় একটি নরকঙ্কাল। সেই নরকঙ্কালের কাছেই মেলে নিখোঁজ অনিকেত রায়ের সাইকেল। এর পরেই নানা প্রশ্ন উঠছে। উদ্বিগ্ন যুবকের পরিবার। পুলিশ উদ্ধার হওয়া নরকঙ্কালটি ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায়। পাশাপাশি, ডিএনএ পরীক্ষার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ জুন থেকে নিখোঁজ অনিকেত। তাঁর বাড়ি হুগলি জেলার বাধাগাছির আজাদ হিন্দ ক্লাব সংলগ্ন এলাকায়। অনিকেতের বাবা অহীন্দ্রশেখর রায় জানান, অনিকেতের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত ছিল। পূর্ব বর্ধমানের কালনাতেও কাজের সূত্রে তাঁর যাতাযাত ছিল। ওঁর সঙ্গে কারও শত্রুতা রয়েছে বলে তিনি কোন দিনও শোনেননি। অনিকেতকে কেউ খুন করতে পারে, তা বিশ্বাস করতে পারছেন না অহীন্দ্র এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা।
অনিকেত নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নেন। হুগলির বলাগড় থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেন যুবকের বাবা। ছেলেকে খুঁজে পেতে পরিবার ওঝারও শরণাপন্ন হয়। কিন্তু অনিকেত কোথায়, তিনি জীবিত না মৃত, এ সব প্রশ্নের উত্তর পায়নি তাঁর পরিবার।
আরও পড়ুন:
এই পরিস্থিতিতে রবিবার কালনার রাজবংশী পাড়ার জলাজমি থেকে অনিকেতের সাইকেল ও মানবদেহের কঙ্কাল উদ্ধার হওয়ার ঘটনা পর নতুন করে প্রশ্ন দানা বেঁধেছে। তার সঙ্গে চিন্তিত যুবকের পরিবার। তবে, উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল অনিকেতের কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। গোটা ঘটনাই তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। ডিএনএ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে মনে করছে পুলিশ। তবে সাইকেলটি যে অনিকেতেরই, সেই ব্যাপারে তাঁর পরিবার নিশ্চিত হলেও, সাইকেলের পাশে পড়ে থাকা কঙ্কালটি কার, তা নিয়ে রহস্য রয়েই গিয়েছে।
যদিও রাজবংশী পাড়ার অনেকে মনে করছেন, এটি একটি খুনের ঘটনা হতে পারে। যে ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে তাঁকে হয় অন্যত্র খুন করে তাঁর দেহ রাজবংশী পাড়ার জলাভূমিতে ফেলে দিয়ে গিয়েছে, নয়তো ঝোপ জঙ্গল ঘেরা এই জলাভূমি এলাকাতেই ওই ব্যক্তিকে খুন করে তাঁর দেহ রেখে দেওয়া হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কালনা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) রাকেশ চৌধুরী বলেন, “সব প্রশ্নের উত্তর পেতে কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে।”