ঘুড়িতে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। নিজস্ব চিত্র।
নোট বাতিলকে কেন্দ্র করে জোর টক্করে নামতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পৌষ সংক্রান্তিকে সামনে রেখে এ বার দু’জনের টক্কর শুরু আকাশেও!— তবে তা ঘুড়ির টক্কর। বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকায় মমতা ও মোদির ছবি দেওয়া ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে দেদার। বিক্রেতাদের দাবি, নোট-বাতিলের চোট সামলাতেই বাজার ধরার এমন পরিকল্পনা।
বর্ধমান শহরে অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ঘুড়ি বিক্রি করছেন। ঘুড়ির উপরে লেখা— ‘মা, মাটি, মানুষ’। বর্ধমানে রাজাদের আমল থেকে পৌষ সংক্রান্তির সময়ে দামোদরের চরে ‘ঘুড়ি উৎসব’ হয়। তবে এ বার নোট-বাতিলের ধাক্কায় ঘুড়ির বাজারেও লেগেছিল বলে দাবি বর্ধমানের উদ্যোগপতি নাজিম আহমেদের। তার পরে বড়বাজারের শেখ রাজা, ভাতারের কামারপাড়ার সৌরভ দাসদের মতো ব্যবসায়ীদের দাবি, ‘‘গোঁত্তা খাওয়া বাজারকে চাঙ্গা রাখছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ঘুড়ি।’’
কালনাতেও পৌষ সংক্রান্তি ও উত্তরায়ণ উপলক্ষে ঘুড়ি উৎসব হয়। বিক্রেতাদের দাবি, এই সময়ে লক্ষাধিক ঘুড়ি বিক্রি হয়। শনিবার কালনার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেল, থরে থরে মমতা ও মোদির ছবি দেওয়া ঘুড়ি সাজানো। খড়দহ, মেটিয়াবুরুজ, কলকাতা-সহ বিভিন্ন এলাকার শিল্পীরা ঘুড়ি তৈরি করছেন। ঘুড়ির দাম দু’ থেকে ৪০ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সামনে এনে নোট-বাতিলের চোট সামলানো গিয়েছে বলেই মনে করছেন ঘুড়ি-বিক্রেতারা। কালনার পূর্ণসিনেমা হল চত্বর এলাকার বিক্রেতা গৌরাঙ্গ সাহা বলেন, ‘‘মোদী-মমতার ছবি দেওয়া ঘুড়ি প্রচুর বিক্রি হচ্ছে।’’ বিক্রিতে কে এগিয়ে? প্রশ্ন শুনে মুচকি হেসে রাজা সাহা নামে এক বিক্রেতার দাবি, ‘‘সেটা অমন করে বলা যাবে না। তবে বিক্রি ভালই।’’
তবে এমন ‘মার্কেট পলিশি’ অবশ্য নতুন নয়। নতুন বছরে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া গ্রিটিংস কার্ড বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি বর্ধমান, এমনকী ঝাড়খণ্ড থেকে আসা কয়েক জন হকারকে ট্রেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া গামছা বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে। অনিল বর্মা নামে এক হকার বলেন, ‘‘আসানসোল পেরনোর পরেই গামছায় ‘দিদি’র ছবি দেওয়া স্টিকার লাগিয়ে দিচ্ছি। বিক্রিও হচ্ছে ভাল।’’ বর্ধমান শহর এবং ভিন্ জেলার হকারেরা এমন গামছা বিক্রি করছেন। বীরভূমের মুরারইয়ের শেখ সারিফুল বলেন, ‘‘নোট বাতিলের পরে গামছা বিক্রি কমে যায়। ‘দিদি’কে ব্র্যান্ড করে গামছা বিক্রি শুরু করতেই কেল্লা ফতে।”
সব শুনে রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “সবার ভরসা মুখ্যমন্ত্রী। এটাই প্রমাণ হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy