প্রতীকী চিত্র।
সদ্য মা হওয়া এক তরুণীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল কালনায়। বুধবার সন্ধ্যায় ওই বধূ সাথী মণ্ডলের (১৯) পরিবার অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তি চেয়ে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখায়। রাতে কালনা থানায় অভিযোগও হয়।
শাসপুর মণ্ডল পাড়ার বাসিন্দা সাথীর পরিবারের দাবি, ১৪ মে প্রসব বেদনা ওঠার পরে তাঁকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অস্ত্রোপচার করে পুত্র সন্তানে জন্মও দেন তিনি। তবে অস্ত্রোপচারের পর থেকেই শ্বাসকষ্ট ও জ্বর শুরু হয় বলে পরিবারের দাবি চিকিৎসার পরে কিছুটা সুস্থ হলে ২০ মে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে বাড়ি যাওয়ার পরে সন্তান সুস্থ থাকলেও ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন সাথী। দু’দিন পর ফের শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি ভর্তি হন কালনা হাসপাতালে।
ক্রমশ শরীর আরও খারাপ হয় তাঁর। অভিযোগ, দীর্ঘসময় ওই বধূর চিকিৎসার ব্যাপারে ভ্রূক্ষেপ করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বারবার আর্জি জানানোর পরে অন্য বিভাগের এক চিকিৎসক পেটের যেখানে অস্ত্রোপচার হয়েছ তার ছবি এবং কিছু পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। রিপোর্টে দেখা যায়, ওই অংশে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ওই চিকিৎসকই পরামর্শ দেন, স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগের যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেছেন তাঁকে রিপোর্টটি দেখানোর।
তবে সাথীর পরিবারের দাবি, ওই চিকিৎসক রিপোর্ট দেখে জানান রোগী সুস্থ আছেন। তবে বুধবার দুপুর থেকেই শ্বাসকষ্টের সঙ্গে যন্ত্রণা শুরু হয়। সাথীর স্বামী সৌমেন মণ্ডলের দাবি, স্ত্রীকে বিছানায় কাতরাতে দেখে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করার বারবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান তাঁরা। কিন্তু লাভ হয়নি। উল্টে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার রোগী ভাল আছেন দাবি করতে থাকেন। ওই স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকও কোনও কথা না বলে হাসপাতাল থেকে চলে যান বলে তাঁদের অভিযোগ। বিকেল পাঁচটা নাগাদ মৃত্যু হয় সাথীর।
এরপরেই তাঁর পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীরা হাসপাতালে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, সময়ে ঠিকঠাক চিকিৎসা করা হলে এমনটা হতো না। চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ জানাতে কয়েকজন হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইয়ের বাড়িও পৌঁছে যান। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ থানায় অভিযোগ করেন সাথীর ভাসুর শঙ্কর মণ্ডল।
বৃহস্পতিবার দেহটি ময়না-তদন্ত করতে পাঠানো হয় কাটোয়ায়। বিকেলে দেহ নিয়ে ফেরার পথে শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘২২ মে হাসপাতালে কোনও চিকিৎসক বৌমাকে দেখেননি। হাসপাতালের গাফিলতিতেই মাকে হারাল সদ্যজাত।’’ ওই চিকিৎসকের কড়া শাস্তিরও দাবি করেছেন তাঁরা।
ওই চিকিৎসক কথা বলতে না চাইলেও সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই জানান, ওই তরুণী শ্বাসকষ্টের অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরিবারের অভিযোগটি গুরুত্ব দিয়ে দেখে তদন্ত করা হবে। কালনা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে,তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy