Advertisement
১৮ মে ২০২৪

দাঁইহাটে স্বাগত-তোরণ

এই তোরণগুলির মধ্যে দু’টিতে বিশেষত শহরের ধর্মীয়-ইতিহাসকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, প্রাচীন ‘ইন্দ্রাণী’ নগরের বারো হাটের এক হাট এই জনপদ।

রবিবার উদ্বোধন হয়েছে হনুমানলাঠি এলাকায় থাকা এই তোরণটির। তা তৈরি করেছে দাঁইহাট পুুরসভা। নিজস্ব চিত্র

রবিবার উদ্বোধন হয়েছে হনুমানলাঠি এলাকায় থাকা এই তোরণটির। তা তৈরি করেছে দাঁইহাট পুুরসভা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাঁইহাট শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

এই শহর বর্ধমানের অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ জনপদ। সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস থেকে লোকশিল্প, নানা ক্ষেত্র এই দাঁইহাট শহরের সঙ্গে লগ্ন। এই শহরের ‘পরিচয়’ হিসেবেই দাঁইহাটের চার দিকে চারটি তোরণ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। তার মধ্যে একটি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। অন্য একটির উদ্বোধন হয়েছে রবিবার।

এই তোরণগুলির মধ্যে দু’টিতে বিশেষত শহরের ধর্মীয়-ইতিহাসকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, প্রাচীন ‘ইন্দ্রাণী’ নগরের বারো হাটের এক হাট এই জনপদ। আবার এই জনপদেরই সন্তান নবীন ভাস্করের মতো শিল্পী। শহরের সঙ্গে জড়িয়ে ভাস্কর পণ্ডিত, বর্ধমানের বেশ কয়েকজন মহারাজাদের কথাও। কিংবদন্তি, ভাস্কর পণ্ডিত দাঁইহাট-সমাজবাড়ির লাগোয়া এলাকায় দুর্গোৎসব করেছিলেন। প্রাচীন সময়ে এই জনপদ মৃৎশিল্প, নৌশিল্প, পিতল-কাঁসার বাসনশিল্প, শঙ্খ শিল্পের জন্যও বিখ্যাত ছিল। এখানের পুরসভার ইতিহাসও ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে।

পাশাপাশি, এই শহরের সঙ্গে শাক্ত ও বৈষ্ণব সংস্কৃতিরও নিবিড় যোগাযোগ। ধর্ম-ভাবনার এই ঐতিহ্যকে প্রকাশের জন্যই ১৪টি ওয়ার্ড সম্বলিত দাঁইহাট পুরসভার কর্তারা দু’টি তোরণ বানাচ্ছেন। বাকি দু’টির একটি তৈরি হয়ে গিয়েছে (‘বিশ্ববাংলা’ লোগো সংবলিত)। অন্য একটি তৈরি হবে।

রবিবার শাক্ত-ভাবনার প্রতি শ্রদ্ধায় শহরের ১৪ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচে টেরাকোটার কারুকাজ সম্বলিত তোরণটির উদ্বোধন হয়েছে। এটির উচ্চতা প্রায় ২০ ফুট। চওড়ায় ২৫ ফুট। বৈষ্ণব-সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধায় একই মাপের আরও একটি তোরণ তৈরি হচ্ছে।

এ দিন হনুমানলাঠিতে অবস্থিত তোরণটির উদ্বোধন করেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন পুরপ্রধান শিশির মণ্ডল। ঘটনাচক্রে এ দিন যে জায়গায় এই অনুষ্ঠানটি হয়, সেটির স্থাননাম সম্পর্কে লোক-ইতিহাসবিদদের মত, তা আসলে ‘ইন্দ্রেশ্বর মন্দিরের দরজার পাশের অংশ।’ (‘কাটোয়ার ইতিহাস’: রসিকলাল ঘোষ)

রবিবার উদ্বোধনের পরে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘শহরের পরিচয় প্রকাশে তোরণের গুরুত্ব অপরিসীম। শহরকে আরও আধুনিক ভাবে সাজাতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ একই বক্তব্য শিশিরবাবুরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Daihat Arch
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE