Advertisement
E-Paper

রিপোর্টের পরে বছর পার, হয়নি কলেজ

উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরনোর পরে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন কলেছে ভর্তির তোড়জোড়। কিন্তু এখানের পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার পাঠ নিতে পাড়ি দিতে হচ্ছে দূরের এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৬ ০২:০০

উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরনোর পরে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন কলেছে ভর্তির তোড়জোড়। কিন্তু এখানের পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার পাঠ নিতে পাড়ি দিতে হচ্ছে দূরের এলাকায়। কাঁকসা ব্লক প্রশাসনের তরফে গত বছর দাবি করা হয়, কলেজ নির্মাণের জন্য বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বছর ঘুরে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর মুখেও কাঁকসা ব্লকে তৈরি হয়নি কোনও কলেজ। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের ছুটতে হচ্ছে অন্য এলাকায়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেল, ৭টি পঞ্চায়েত নিয়ে কাঁকসা ব্লক। রয়েছে একশোরও বেশি গ্রাম। কাঁকসার ১৮টি হাইস্কুলের মধ্যে পনেরোটিতেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোলেই শুরু হয় দুর্ভোগ। পড়ুয়ারা জানায়, পাশের ব্লক গলসি ১ ও ২-তে একটি করে কলেজ রয়েছে। কিন্তু সেখানে আসন সংখ্যা কম। স্নাতক স্তরে নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়েই পড়াশোনা হয় ওই দু’টি কলেজে। ফলে ওই কলেজ দু’টিতে কাঁকসার অধিকাংশ পড়ুয়ারই পছন্দমতো বিষয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ মেলে না। এই পরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষার পাঠ নিতে গেলে বর্ধমান, বোলপুর বা দুর্গাপুরে ছুটতে হয় বলে জানান বাসিন্দারা।

সবার পক্ষে অবশ্য বাইরে গিয়ে পড়াশোনার খরচ সামলানো মুশকিল। কারণ এলাকার অধিকাংশ পড়ুয়াই অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের বলে জানান কাঁকসার এক স্কুল শিক্ষক। প্রতিদিনের যাতায়াত, ঘরভাড়া সামলানো সব পড়ুয়ার ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। এক শিক্ষকের দাবি, এলাকায় কলেজ না থাকায় অনেককেই বাধ্য হয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের পর পড়াশোনায় ইতি টানতে হয়।

কাঁকসার বিভিন্ন স্কুলের অনেক পড়ুয়াই পড়ুয়ারা প্রতি বারের মতো এ বারেও উচ্চ মাধ্যমিকে তাক লাগানো ফল করেছে। কিন্তু এরপর ছাত্রদের ভবিষ্যত কী, তা নিয়ে চিন্তায় মাস্টারমশাইয়েরাও। মলানদিঘি দুর্গাদাস বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক তন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘নতুন সিলেবাসে এলাকার ছাত্রছাত্রীরা খুব ভাল ফল করেছে। এলাকায় কলেজ থাকলে পড়ুয়ারা উপকৃত হবে। কারও পড়াশোনা যেন বন্ধ না হয়!’’ এলাকায় কলেজ হলে কাঁকসা তো বটেই, পাশের জেলা বীরভূমের ইলামবাজার, বাঁকুড়ার সোনামুখী, বড়জোড়া, ফুলবেরিয়া, বেলিয়াতোড় প্রভৃতি জায়গার পড়ুয়ারাও উপকৃত হবেন বলে আশা তন্ময়বাবুর।

কলেজ তৈরির জন্য বাসিন্দা থেকে শিক্ষক, সকলেই প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে তদ্বির করেছেন। বেশ কয়েকবার প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়। যেমন, কলেজ তৈরির জন্য ২০১৫ সালে ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বৈঠক ডাকা হয়। কাঁকসা হাইস্কুলের ওই বৈঠকে ছিলেন প্রধান শিক্ষক, স্থানীয় বিধায়ক ও প্রশাসনের কর্তারা। বিভিন্ন স্কুল থেকে ফি বছর কত জন পড়ুয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়, কত জনই বা উত্তীর্ণ হয়, তা নথিভুক্তও করা হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৈঠকে কাঁকসা হাইস্কুলের তরফে জানানো হয় তাদের প্রায় ১২ বিঘা জমি রয়েছে। কলেজ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হলে সেই জমির কিছুটা ছেড়ে দেওয়ারও প্রস্তাব দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ তৈরির প্রস্তাব এলে প্রাথমিক ভাবে ঘর ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন সিলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল।

কলেজ তৈরি করতে ব্লক প্রশাসনের তরফে সংশ্লিষ্ট দফতরে রিপোর্টও পাঠানো হয়। কিন্তু তারপরে বছর ঘুরলেও এলাকায় তৈরি হয়নি কলেজ। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি রাজ্য স্তরের। নির্দিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে। নির্দেশ এলেই কাজ শুরু হবে।’’

এই পরিস্থিতিতে এক পড়ুয়ার বক্তব্য, ‘‘প্রশাসনের গড়িমসিতে এ বারেও তাই বাক্স-প্যাঁটরা গুটিয়ে ভিন্ জায়গায় যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।’’

Kaksa school Student Collage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy