Advertisement
E-Paper

আগুন লাগলে বেরবো কী ভাবে?

‘ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরে..’, ‘হয়তো সুপারের কাছে..’, ‘জানি না তো..’— আপৎকালীন দরজাগুলোর চাবি কোথায়, জানতে চাওয়াতে এমনই বিভিন্ন উত্তর এল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে। রোগী ও পরিজনদের ক্ষোভ, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরেও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে হুঁশ ফেরেনি কাটোয়ার।

নিজস্ব সংবাদদতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৬ ০২:০০
মরচে পড়েছে আপৎকালীন দরজার তালায়। (ইনসেটে) খোলা বিদ্যুতের বোর্ড। —নিজস্ব চিত্র।

মরচে পড়েছে আপৎকালীন দরজার তালায়। (ইনসেটে) খোলা বিদ্যুতের বোর্ড। —নিজস্ব চিত্র।

‘ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরে..’, ‘হয়তো সুপারের কাছে..’, ‘জানি না তো..’— আপৎকালীন দরজাগুলোর চাবি কোথায়, জানতে চাওয়াতে এমনই বিভিন্ন উত্তর এল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে। রোগী ও পরিজনদের ক্ষোভ, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরেও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে হুঁশ ফেরেনি কাটোয়ার।

মুর্শিদাবাদে অগ্নিকাণ্ডের সময় সেখানের কর্মীরা অভিযোগ করেছিলেন, আপৎকালীন সিঁড়ির তালা বন্ধ ছিল। কাটোয়ার এই হাসপাতালে শিশু বিভাগে রাউন্ড দিতে এসেছিলেন এক চিকিৎসক। এখানেও দেখা গেল আপৎকালীন সিঁড়ির তালা বন্ধ। কেন? জিজ্ঞেস করায় সেই চিকিৎসক জানান, ‘চাবি হয়তো ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরে।’ সেখানে গিয়ে তপন বৈরাগ্য নামে এক কর্মীর দেখা মিলল। চাবির কথা জিজ্ঞেস করাতে তিনি বলেন, ‘হয়তো সুপারের ঘরে রয়েছে।’ একই ছবি প্রসূতি বিভাগেও। সেখানে কর্মরত নার্স জানান, ওয়ার্ডের আপৎকালীন দরজার চাবি সহকারি নার্সিং সুপারের কাছে। চাবির খোঁজ অবশ্য সহকারি নার্সিং সুপারেরও জানা নেই। এই হাসপাতালের হেল্পডেস্কে বসে থাকা অপর্ণা দত্ত নামে এক জন আবার বলেই ফেলেন, ‘‘চাবি কখন কার কাছে থাকে জানি না। এ ভাবেই তো এত বছর কাজ করছি।’’

দিন কয়েক আগেই এই হাসপাতালের অপরাশেন থিয়েটারে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে বিপত্তি ঘটেছিল এই হাসপাতালে। রবিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, সেই অপারেশন থিয়েটারের কাছেই হাঁ করে খোলা বিদ্যুতের প্যানেল বোর্ড। সিসিটিভি-র বিদ্যুত সংযোগের তারগুলিও ঝুলে রয়েছে। শিশু বিভাগে ‘স্মোক ডিটেক্টর’ রয়েছে বটে। কিন্তু সেটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় অকেজো। আপৎকালীন বিভাগের ভেতরে ডান দিকে হাঁ করে খোলা বিদ্যুতের প্যানেল বোর্ড।

দমকল সূত্রের খবর, আগুন লাগলে সাধারণ ভাবে হাইড্রেন সিস্টেম ও অ্যালার্ম সিস্টেম থাকাটা প্রাথমিক ভাবে দরকার। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে হাইড্রেন সিস্টেম তো দূর, সামান্য হোসপাইপেরও ব্যবস্থা নেই। অ্যালার্ম চালু থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের প্যানেলটিও বিকল। মেয়াদ পেরিয়েছে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলিরও।

এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ রোগীর পরিজনেরা। জাহাঙ্গির আলম নামে এক জন বলেন, ‘‘তিন তলায় লিফটের পাশে বিদ্যুতের প্লাগ থেকে তার ঝুলছে। আগুন লাগলে বেরবো কী ভাবে?’’ দমকল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জন অবশ্য বলেন, ‘‘যা রিপোর্ট দেওয়ার, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দিয়েছি।’’ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আমূল বদলানোর আশ্বাস দিয়েছেন সুপার রতন শাসমল। সেই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, চাবির হদিস হাসপাতালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানানো হবে।

No escape way Fire case Katwa hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy