Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
COVID19

বিধি ভেঙে জমায়েত, নালিশ

এলাকায় ‘অসামাজিক কাজকর্ম’ বাড়ছে, এই অভিযোগে রবিবার সকালে কুলটি থানায় স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল যুব তৃণমূলের কুলটি ব্লক কমিটি।

কুলটি থানার সামনে রবিবার।

কুলটি থানার সামনে রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২১ ০৬:১০
Share: Save:

দলের জেলা কমিটির অনুমোদন না নিয়ে যুব তৃণমূলের ডাকা থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন কুলটির প্রক্তন তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। এ বিষয়ে দল উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে, জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন। তবে এ দিনের কর্মসূচি থানা ঘেরাও ছিল না, দাবি উজ্জ্বলবাবুর। তবে অনুমোদন ছাড়াই যে এই কর্মসূচি হয়েছে তা স্বীকার করেছেন যুব তৃণমূলের কুলটি ব্লক সভাপতি বাবন মুখোপাধ্যায়। পাশাপাশি, কোভিড-বিধি ভেঙে জমায়েত করারও অভিযোগ উঠেছে সেখানে।

এলাকায় ‘অসামাজিক কাজকর্ম’ বাড়ছে, এই অভিযোগে রবিবার সকালে কুলটি থানায় স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল যুব তৃণমূলের কুলটি ব্লক কমিটি। সেই মতো, এ দিন প্রায় পাঁচশো কর্মী-সদস্যকে নিয়ে কুলটি থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। অভিযোগ, কোভিড-বিধি উপেক্ষা করে, পারস্পরিক দূরত্ব বজায় না রেখেই ঘণ্টাখানেক ধরে চলে এই কর্মসূচি। অনেকেই মাস্কও পরেননি বলে অভিযোগ। এই কর্মসূচির জেরে স্টেশন রোডে যান চলাচল ও পথচারীদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কুলটি থানায় স্মারকলিপি দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। এই কর্মসূচিতেই যোগ দেন উজ্জ্বলবাবু।

এই কর্মসূচিতে দলের অনুমোদন ছিল না বলেই দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের। বাবনবাবু নিজেও বলেন, ‘‘দলের জেলা সভাপতির অনুমতি না নিয়েই কর্মসূচির বার্তা সং‌গঠনের জেলা সভাপতি রূপেশ যাদবের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছি। তিনি তা দেখেওছেন।’’ রূপেশবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি জানতাম, সংগঠনের প্রতিনিধিরা স্মারকলিপি দেবেন থানায়। কিন্তু পাঁচশো লোকের জমায়েত, ঘেরাওয়ের কথা জানতাম না।’’

যদিও, একে বিক্ষোভ বা ঘেরাও-কর্মসূচি বলতেই রাজি নন উজ্জ্বলবাবু। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এলাকায় বিজেপির কয়েকজন নেতা বালি ও কয়লার অবৈধ কারবার করার জন্য পুলিশের উপরে চাপ সৃষ্টি করছে। পুলিশ যেন এ সব দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেয়, সে কথা জানাতেই এই কর্মসূচি। আমরা পুলিশকে সহোযোগিতা করছি।’’ কোভিড-বিধি লঙ্ঘন প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কাউকে ডাকা হয়নি। সবাই দলকে ভালবেসে এসেছেন।’’ কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দারের অবশ্য তোপ, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ করে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন উজ্জ্বলবাবু। দলের কেউ কোনও বেআইনি কারবারের সঙ্গে জড়িত নন। ও সব তৃণমূলের লোকজন করে।’’ তৃণমূলের জেলা কমিটির সম্পাদক অভিজিৎ ঘটক বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ করে দেখতে হবে।’’ ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘জেলা কমিটির কোনও রকম অনুমোদন না নিয়েই এই ঘেরাও কর্মসূচি হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এমন কর্মসূচি দল বরদাস্ত করবে না। উপযুক্ত পদক্ষেপ করব।’’

সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ-প্রশাসন বিধি ভেঙে জমায়েতের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেই জানা গিয়েছে। তবে বিষয়টি তাঁদের নজরে রয়েছে বলে দাবি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার। আইএমএ-র সদস্য চিকিৎসক প্রভাসচন্দ্র মাজি বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতির সময়ে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলিকেও আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতেই হবে। তা না হলে, বিপদ আরও বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE