এই বাড়িতেই খুন। নিজস্ব চিত্র
থানার সামনে এসে এক ব্যক্তি চিৎকার করছিলেন, ‘বাবাকে খুন করেছি’। পুলিশকর্মীরা তাঁকে থানায় বসিয়ে রেখে খোঁজ নেন এলাকায়। জানা যায়, সত্যিই খুন হয়েছেন এক বৃদ্ধ। শনিবার বিকেলে কৌশিক ঘোষ নামে বছর বিয়াল্লিশের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বর্ধমান থানার পুলিশ।
শহরের লক্ষ্মীপুর মাঠের জোড়ামন্দির এলাকায় ভাড়া বাড়ি থেকে তুষারকান্তি ঘোষের (৭৫) দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। ক্রীড়াবিদ হিসেবে জেলায় নামডাক ছিল একটি বেসরকারি সংস্থার প্রাক্তন কর্মী তুষারবাবুর। নান নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। কৌশিকবাবুর মানসিক ভারসাম্যের সমস্যা রয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তুষারবাবুর এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বিবাহসূত্রে অন্যত্র থাকেন। স্ত্রী শর্মিলাদেবীর মৃত্যু হয় মাস কয়েক আগে। পরিজনদের দাবি, তার পরেই কৌশিকের ধারণা হয়, মায়ের মৃত্যুর জন্য বাবা দায়ী। সে নিয়ে দু’জনের গোলমাল হতো। তার জেরে মাস তিনেক কাছাকাছি একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন তুষারবাবু। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এ দিন দুপুরে কৌশিক সেখানে গেলে বাবা-ছেলের মধ্যে ফের বচসা হয়। পড়শিদের একাংশ জানান, এ দিন বিকেলে তুষারবাবুর কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে তাঁরা কৌশিককে চেপে ধরেন। তখন কৌশিক থানায় যাবেন বলে বেরিয়ে যান।
তুষারবাবুর দাদা, শহরের উল্লাসের কাছে একটি আবাসনের বাসিন্দা নীহারকান্তি ঘোষের অভিযোগ, ‘‘ভাইকে খুবই উৎপাত করত কৌশিক। সে জন্যই ভাই তিন মাস আলাদা থাকছিল। কিন্তু এমন ঘটবে, কল্পনাও করিনি!’’ তুষারবাবুর ভাগ্নে সুব্রত রায় জানান, এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ তিনি মামার সঙ্গে কথা বলে আসেন। তখন কৌশিক সেখানে ছিলেন না। সুব্রতবাবু কথায়, ‘‘ফিরে আসার কিছু পরেই দুঃসংবাদ পাই।’’
তুষারবাবু আগে জেলা ফুটবল দলের কোচ ছিলেন। নানা ক্লাবেও কোচিং করিয়েছেন। খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। খেলেছেন কলকাতাতেও। জোড়ামন্দির এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণা বিশ্বাস বলেন, ‘‘মাঝে-মধ্যে বাবা-ছেলের অশান্তি হতো। কিন্তু তার জেরে এমন ঘটবে, ভাবতে পারিনি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy