Advertisement
E-Paper

‘কেষ্টদা’ই ভাল ছিলেন, বলছেন দলের একাংশ

শুক্রবার বিকেলে গুসকরায় সভা করে নাম না করে অনুব্রতবাবুকেই এলাকার দায়িত্বে রাখার দাবি তুলেছেন তৃণমূলের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০৪:৫২
গুসকরায় চলছে তৃণমূলের সভা, শুক্রবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র

গুসকরায় চলছে তৃণমূলের সভা, শুক্রবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র

এলাকার সঙ্গে যোলো বছরের যোগ তাঁর। লোকসভার কেন্দ্র বিন্যাসে বদল হয়েছে, কিন্তু এলাকা থেকে তাঁর ‘হাত’ সরেনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে অবশ্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে, পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোটের দায়িত্ব দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে গিয়েছে ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলের হাতে। শুক্রবার বিকেলে গুসকরায় সভা করে নাম না করে অনুব্রতবাবুকেই এলাকার দায়িত্বে রাখার দাবি তুলেছেন তৃণমূলের একাংশ। সে ব্যাপারে সরাসরি মন্তব্য না করে অনুব্রত বলেছেন, “দল তৈরির সময় থেকে ওই এলাকায় সংগঠন করছি। তবে পর্যবেক্ষক হিসেবে নয়, লোকসভা অনুযায়ী দায়িত্বভার ছিল।’’
দলের বীরভূম জেলা সভাপতি হওয়ার আগে থেকেই বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন অনুব্রতবাবু। ২০০৪ সালে বোলপুর লোকসভার মধ্যে ছিল আউশগ্রাম ও মঙ্গলকোট বিধানসভা। কেতুগ্রাম ছিল বহরমপুর লোকসভার মধ্যে। ২০০৮ সালে তাঁর ‘নজরদারি’তেই গুসকরা পুরসভায় বামেদের হারিয়ে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করে। ২০০৯ সালে তিনটে বিধানসভা বোলপুর লোকসভার মধ্যে চলে আসে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, লোকসভা নির্বাচনের পরে মঙ্গলকোটের সিপিএম নেতা ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় খুন হন। কেতুগ্রাম-আউশগ্রামেও প্রতিদিন রাজনৈতিক-হিংসা লেগে থাকত। সে সময় জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ থাকলেও, ধীরে ধীরে এলাকার রাশ হাতে নিতে শুরু করেন ‘কেষ্টদা’, বলছেন ওই সব এলাকায় দলের একাধিক কর্মী। তাঁদের দাবি, রাত-বিরেতে কর্মীদের ডাকে হাজির হয়েছেন তিনি। ‘অত্যাচারিত’ কর্মী-সমর্থকদের নিজের কাছে নিয়ে গিয়ে রেখেছিলেন। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে, ‘কেষ্টদা’র বিরুদ্ধে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ নানা অভিযোগ করেন। তাতে অবশ্য তাঁর গুরুত্ব কমেনি। বরং ‘প্রভাব’ বেড়েছিল।
শুক্রবার বিকেলে গুসকরায় তৃণমূলের শহর ও আউশগ্রাম ১ ব্লক নেতৃত্ব একটি সভা করেন। সেখানে নাম না করে অনুব্রতবাবুকেই এলাকার নেতৃত্বে রাখার দাবি তোলা হয়। দলনেত্রীকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আবেদনও জানান তাঁরা। গুসকরা শহর তৃণমূল সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগের নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ২০০৮ সালের আগে থেকে সেই নেতৃত্বের নির্দেশে একের পর এক ফল এসেছে। আমরা সে সম্পর্কে ছেদ চাইছি না।’’ আউশগ্রাম ১ ব্লকের সভাপতি সালেক রহমান অনুব্রতবাবুকেই নেতৃত্বে দেখতে চান বলে দলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন। মঙ্গলকোটের ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী আবার শুক্রবার রাতে দাবি করেন, ‘‘কেষ্টদা আমাদের এলাকার দায়িত্বে আছেন বলেই জানি।’’ কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেন, “কেষ্টদাই (অনুব্রতর ডাকনাম) সংগঠনটা দেখতেন। বিপদে-আপদে পাশে থাকতেন। সাহায্য করতেন। এতে সংগঠনের লাভ হয়েছে। তবে দলের নির্দেশই শেষ কথা।’’
তবে তৃণমূলের অন্দরে ভিন্ন মতও রয়েছে। মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী দাবি, “দলনেত্রী ভাল কিছু বুঝেছেন, তাই পর্যবেক্ষক পদ থেকে ওঁকে সরিয়ে দিয়েছেন।’’ গুসকরা পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়েরও দাবি, “যোগ্য এবং দক্ষ মানুষকে আউশগ্রামের দায়িত্ব দিয়েছেন দিদি।’’
কো-অর্ডিনেটর হিসেবে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া ভাতারের বিধায়ক, আউশগ্রামের বাসিন্দা সুভাষ মণ্ডল অবশ্য এখনই জটিলতায় ঢুকতে চাইছেন না। বলেছেন, ‘‘আমি প্রায় ১৬ বছর জেলার যুব সভাপতি ছিলাম। দল কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দিয়েছে। আমি এখন কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রয়েছে। সে জন্য এখনই কিছু ভাবছি না।’’ অজয়-কুনুর পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রশ্নচিহ্ন রেখে অনুব্রতও বলেন, “এখনও কোনও কথা বলার সময় আসেনি।’’

TMC Anubrata Mandal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy