Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

দলে দ্বন্দ্বের ছায়া, পঞ্চায়েতে টানা গরহাজির প্রধান

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল কিছু দিন আগে। তার পর থেকে প্রধান পঞ্চায়েতে আসছেন না বলে অভিযোগ। জামুড়িয়ার চুরুলিয়া পঞ্চায়েতে তার জেরে কাজকর্মে বেশ অসুবিধে হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর অনেকের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:১৮
Share: Save:

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল কিছু দিন আগে। তার পর থেকে প্রধান পঞ্চায়েতে আসছেন না বলে অভিযোগ। জামুড়িয়ার চুরুলিয়া পঞ্চায়েতে তার জেরে কাজকর্মে বেশ অসুবিধে হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর অনেকের। যদিও প্রধান পিন্টু মিশ্রের দাবি, অসুস্থতার কারণে তিনি কিছু দিন অফিসে যেতে পারছেন না।

২০১৩ সালে ৬-৫ ব্যবধানে জিতে চুরুলিয়া পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল। প্রধান হন সুলেখা বাউরি, উপপ্রধান পিন্টু মিশ্র। কয়েক মাস আগে সুলেখাদেবী অসুস্থতার কারণে সরে দাঁড়ালে পিন্টুবাবুকে প্রধান পদে বসানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি তিনি দলের অন্দরে কোন্দলে জড়িয়ে পড়েন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

গত বছর পিন্টুবাবু ও দলের এক ব্লক নেতার বিরুদ্ধে কয়লা কারবারে জড়িয়ে দলের ভাবমূর্তি খারাপ করার অভিযোগ তুলে উচ্চ নেতৃত্বকে চিঠি পাঠান এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। বিধানসভা ভোটে দলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন জামুড়িয়ায় প্রার্থী হয়ে হেরে যাওয়ার পরে ব্লক নেতৃত্বে বড়সড় রদবদল আনা হয়। পিন্টুবাবুকে সরিয়ে চুরুলিয়া অঞ্চল সভাপতি করা হয় প্রদীপবাবুকে। পিন্টুবাবুকে দেওয়া হয় ব্লকের সাধারণ সম্পাদক পদ।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এলাকায় কয়লা কারবার নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে দলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বাড়তে থাকে। ২৬ অক্টোবর পিন্টুবাবু ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগে থানায় বিক্ষোভ দেখান সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া এক নেতা। পিন্টুবাবু পাল্টা অভিযোগ করেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তার পর থেকেই তিনি পঞ্চায়েত অফিসে যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ মণ্ডল, নবনী বাউরি, জগবন্ধু ধীবর, লক্ষণ সাধুদের অভিযোগ, নানা কাজে পঞ্চায়েতে গিয়ে প্রধান না থাকায় ফিরে আসতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, পিন্টুবাবু প্রধান হওয়ার পরে উপপ্রধান পদে কাউকে বসানো হয়নি। তা করা হলে এই ভোগান্তি হতো না। তৃণমূলের ব্লক নেতা ব্রজনারায়ণ রায়ের বক্তব্য, ‘‘প্রধানকে মারধর করা হল, কিন্তু তার কোনও প্রতিকার হল না। অফিসে যেতে ভয় পাওয়া তাই স্বাভাবিক।’’ আর এক নেতা প্রদীপবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘আমি গোড়াতেই যে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ করেছিলাম, উচ্চ নেতৃত্ব তখন ব্যবস্থা নিলে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরিই হতো না।’’

পিন্টুবাবু অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে অফিসে না যাওয়ার কথা মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘শরীর খারাপ থাকায় কয়েক দিন যাইনি।” দ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত অফিসে প্রধানকে না পেয়ে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। সমস্যা মেটাতে ব্লক প্রশাসনকে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Pradhan Churulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE