Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

যাত্রীদের গায়ে চাপে না লাইফ জ্যাকেট

নদীর এক দিকে কালনা, অপর পাড়ে নদিয়ার নৃসিংহপুর ঘাট। ভোর হতেই হাসপাতাল, বাজার, স্কুল, কলেজ-সহ নানা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য ফেরি চড়েন দুই জেলার বহু মানুষ। প্রায় ১৫ মাস আগেই কালনা খেয়াঘাটে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় বহু মানুষের।

ঝুঁকি: এ ভাবেই চলে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র

ঝুঁকি: এ ভাবেই চলে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৭
Share: Save:

ঘাটের সামনে টাঙানো ফ্লেক্সে লেখা, ‘লাইফ জ্যাকেট আপনার জীবন ফিরিয়ে দেবেই..’। কিন্তু লেখাই সার। বর্ষার ভাগীরথীতে তরতরিয়ে যাত্রী নিয়ে ছুটছে নৌকা। কারও গায়েই নেই লাইফ জ্যাকেট। এই পরিস্থিতিতে কালনায় প্রশাসনের কর্তাদের আক্ষেপ, বিভিন্ন পদক্ষেপ করেও যাত্রী বা ইজারাদারদের একাংশের মধ্যে জ্যাকেট ব্যবহারে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি।

নদীর এক দিকে কালনা, অপর পাড়ে নদিয়ার নৃসিংহপুর ঘাট। ভোর হতেই হাসপাতাল, বাজার, স্কুল, কলেজ-সহ নানা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য ফেরি চড়েন দুই জেলার বহু মানুষ। প্রায় ১৫ মাস আগেই কালনা খেয়াঘাটে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। তার পরেই খেয়াঘাটের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

ওই ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। মাস আটেক আগে মহকুমা প্রশাসন দু’দফায় প্রায় ১৫০টি লাইফ জ্যাকেট বিলি করে। ঘাটের ইজারাদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়, যাত্রীরা লাইফ জ্যাকেট পরে যাতে নৌকায় ওঠেন, তা নিশ্চিত করা। বিষয়টি তত্ত্বাবধানের জন্য কালনা খেয়াঘাটে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে মোতায়েনও করা হয়।

তার পরেও হাল ফেরেনি বলে ক্ষোভ প্রশাসনের কর্তাদের। যাত্রীদের জ্যাকেট পরিয়ে তবেই নৌকা ছাড়া হয়। সম্প্রতি কালনা খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা গিয়েছে নৌকার মধ্যেই এক পাশে রাখা জ্যাকেটগুলি। তা ছাড়া ঘাট লাগোয়া একটি ঘরেও ডাঁই করে রাখা প্রচুর লাইফ জ্যাকেট। কিন্তু সেই জ্যাকেট যাত্রীদের গায়ে ওঠে না কেন? খেয়াঘাটের কর্মীদের একাংশের দাবি, প্রচারে খামতি নেই। কিন্তু যাত্রীরা ‘যুক্তি’ দেন, জ্যাকেটগুলি নোংরা। কখনও বা অন্যের ব্যবহৃত জিনিস গায়ে তুলতেও আপত্তি করেন অনেকে। তা ছা়ড়া ব্যস্ত সময়ে জ্যাকেট গায়ে চাপানোর ‘সময়’ থাকে না বলে দাবি যাত্রীদের একাংশের। এক মাঝির আক্ষেপ, ‘‘যাত্রীরা কথা শোনেন না। অনেক জ্যাকেটই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফর বা খেয়াঘাট পরিদর্শনে কোনও কর্তা এলে যাত্রীদের গায়ে লাইফ জ্যাকেট ওঠে বলে ঘাটের কর্মীরা জানান।

গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত কালনা খেয়াঘাটে অভিযান চালানো হবে। গাফিলতি ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট ইজারাদার ও মাঝির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইজারাদারদের বড় অঙ্কের জরিমানাও করা হতে পারে।’’ কালনা খেয়াঘাটে মহকুমা প্রশাসন আরও একশোটি এবং কালনা পুরসভা ৫০টি নতুন লাইফ জ্যাকেট দেবে বলেও খবর। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘পুরসভা লাইফ জ্যাকেট কেনার বরাত দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE