ভিড়: বর্ধমানের রথতলা বাজারে রবিবার। নিজস্ব চিত্র
বাঙালির পাতে নেই রুই, কাতলা। রবিবাসরীয় মেনুতে প্রায় উধাও খাসি-মুরগির ঝোলও। তার জায়গা দখল করেছে ইলিশ! গত কয়েক দিন ধরে বর্ধমান, কালনা, কাটোয়া-সহ নানা বাজারে ঢুঁ দিয়ে অন্তত তেমনটাই দাবি পূর্ব বর্ধমানের নানা প্রান্তের ক্রেতা-বিক্রেতা, উভয়েরই। ইলিশের এমন ঝোড়ো ইনিংসে দাম কমেছে মুরগি ও খাসির মাংসেরও।
জেলার নানা বাজারে সপ্তাহ দু’য়েক আগেও মুরগির মাংসের দাম, প্রতি কিলোয় ঘোরাফেরা করেছে দেড়শো টাকার আশেপাশে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছিল ৪৮০ টাকা কেজিতে। রবিবারের সকালে মাংস কিনতে ক্রেতাদের লাইন দেওয়ার ছবিটাও দেখা যেত।
এই রবিবার অবশ্য ছবিটা আলাদা, ভিড় মাছ বিক্রেতাদের কাছেই। দিঘা থেকে ডায়মন্ডহারবার, সর্বত্র জালে উঠছে টন টন ইলিশ। তাই গোটা রাজ্যের মতো জেলা জুড়়েই মাছ বাজার উপচে পড়ছে ইলিশে। শহরের এক বাজারে তেলাপিয়া-বাটা নিয়ে ফি দিন বসেন এক বৃদ্ধা। রবিবার তিনি বললেন, ‘‘এমন সুযোগ কেউ ছাড়ে। এখন তাই শুধুই ইলিশ।’’ বর্ধমানের বাজারে ডায়মন্ডহারবার, বসিরহাট, ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ফি দিন ছশো থেকে সাতশো ক্যুইন্টাল মাছ ঢুকছে। দেদার মাছ ঢোকায় ইলিশ বিকোচ্ছে দু’শো থেকে চারশো টাকা কেজি দরে।
দাম কম ও জোগান বেশি থাকার ভরপুর ফায়দা লুটছেন ক্রেতারাও। কাটোয়ার রায়েরপাড়ার বাপি মাঝি ফি দিন ভ্যানে করে বাড়ি বাড়ি মাছ বিক্রি করেন। তাঁর কথায়, “দু’রকম দামের ৫০ কেজি ইলিশ বিক্রি করতে বেরিয়ে ছিলাম। দুপুরের আগেই সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে।” কালনার পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা স্বর্ণময়ী রাজবংশীর কথায়, “রুই, কাতলা, মুরগি তো প্রতিদিনই কিনি। আজ ইলিশই কিনেছি বেশি করে।’’ বর্ধমানের টাউনহল পাড়ার ঋজু ভৌমিকের কথায়, “সস্তার ইলিশ কতদিন দেখিনি! মাংসের দিকে তাকাতেই ইচ্ছে করছে না।’’
মাংসের বাজারে যে টান, তা বিক্রেতাদের কথাতেই মালুম পড়ে। রথতলার এক মুরগি বিক্রেতার দাবি, “রবিবারে প্রায় ৫০ কেজি মাংস বিক্রি করি। এ দিন অনেকটাই কম বিক্রি হয়েছে।’’ স্টেশন বাজার এলাকার অপর এক মাংস বিক্রেতা জানান, অন্য রবিবারের তুলনায় এ বার ১২ কেজি খাসির মাংস বিক্রি কম হয়েছে। এই রবিবার বর্ধমানের রথতলা, তেতুঁলতলা, স্টেশন বাজার, নীলপুর বাজার-সহ নানা জায়গায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ইলিশের ঠেলায় মুরগির দাম কিলো প্রতি তিরিশ টাকা, খাসির মাংসের দাম গড়ে ৩০ থেকে ৮০ টাকা কমাতে হয়েছে।
তবে ব্যবসায়ীদের অনুমান, চলতি সপ্তাহতেই ইলিশের ‘ভরা বাজার’ শেষ হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy