Advertisement
E-Paper

ভাঙাচোরা মসজিদেই ইদের নমাজ

ইতিহাস বলে, সপ্তদশ শতকের শেষের দিকে এক পর্তুগিজ শিল্পীর আঁকা মানচিত্রে কাটোয়া মহকুমায় ‘উদয়পুর’ নামে গঙ্গাতীরবর্তী এক জায়গার উল্লেখ ছিল। পরবর্তীতে উনিশ শতকের শেষে ডব্লু ডব্লু হান্টারও তাঁর মানচিত্রে উদয়পুরের উল্লেখ করেন, যা বর্তমানে উদ্ধারণপুর নামে পরিচিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৭ ১২:৫০
নিভৃতে: নরসিংহপুরের মসজিদে। নিজস্ব চিত্র

নিভৃতে: নরসিংহপুরের মসজিদে। নিজস্ব চিত্র

ইটের নকশা বোঝা দায়। দেওয়ালও ঢেকেছে বটের ঝুড়িতে। কেউ না বলে দিলে বিশ্বাস হবে না একসময় এই মসজিদেই দূরদূরান্ত থেকে প্রার্থনা করতেন আসতেন মানুষ। কেতুগ্রামের নরসিংহপুরের বড় মসজিদের হাল এমনই। তবুও ইদের দিন হলেই এখনও ওখানে নমাজ পড়তে ভিড় জমান বহু। কালনার দাঁতনকাঠিতলার মসজিদের অবস্থাও এরকমই।

ইতিহাস বলে, সপ্তদশ শতকের শেষের দিকে এক পর্তুগিজ শিল্পীর আঁকা মানচিত্রে কাটোয়া মহকুমায় ‘উদয়পুর’ নামে গঙ্গাতীরবর্তী এক জায়গার উল্লেখ ছিল। পরবর্তীতে উনিশ শতকের শেষে ডব্লু ডব্লু হান্টারও তাঁর মানচিত্রে উদয়পুরের উল্লেখ করেন, যা বর্তমানে উদ্ধারণপুর নামে পরিচিত। এই উদ্ধারণপুর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরেই নরসিংহপুর। সেখানে বিঘেখানেক জায়গার উপর রয়েছে ওই মসজিদ। আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক স্বপন ঠাকুরের দাবি, ইটের গড়ন দেখলেই বোঝা যায় সেগুলি প্রাক-মুঘল পর্বের। ইটের খাঁজে উঁকি দেয় টেরাকোটার নকশাও।

মসজিদের তত্ত্বাবানের দায়িত্বে থাকা খাদিম লালমি শেখ জানান, শহিদ ফকির নামে এক পীরের সাধনক্ষেত্র ছিল এখানে। অনেকে পীরের মাজারও বলেন। প্রতি বছর ২ বৈশাখ মাজার ঘিরে বড় মেলাও বসে। কিন্তু মসজিদের যা হাল, তাতে না সারালে অচিরেই সব বন্ধ করতে বলে হলে তাঁর আশঙ্কা। তাঁর দাবি, গ্রামে আরও দুটি মসজিদ থাকলেও ইদের দিন বড় মসজিদের মাজার লাগোয়া ইদগাহেই উপাসনা করেন গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা। সোমবার মুর্শিদাবাদের সালার থেকে আসা সহিদুল শেখ, পিয়ার শেখদের কথায়, ‘‘এই মসজিদের ঐতিহ্যই আলাদা। এখানে হিন্দুরাও মানত করতে আসেন।’’ তবে সংস্কারের অভাবে মসজিদের অস্তিত্ব কত দিন থাকবে তা নিয়ে সংশয়ে তাঁরাও।

কেতুগ্রাম ১ ব্লকের কুলুট গ্রামেও আলাউদ্দিন হুসেন শাহের তৈরি হুসেন শাহি মসজিদ সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। এই মসজিদের গায়েও ছিল টেরাকোটার নকশা। তবে এখন আর সে সব চোখে পড়ে না। গবেষকদেরও দাবি, হুসেন শাহি, কুলুট ও নরসিংহপুরের এই তিন মসজিদেরই আশু সংরক্ষণ জরুরি। কেতুগ্রাম ২-এর বিডিও অর্ণব সাহা জানান, বাসিন্দারা আর্জি জানালে সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে মহকুমার সর্কিট ট্যুরিজমের সাথে যুক্ত করা হবে নরসিংহপুর মসজিদকে।

কালনার দাঁতনকাঠি তলার বহু পুরনো মসজিদ সংস্কারেরও দাবি ওঠে ইদের দিনে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সংস্কারের অভাবে পাঁচশো বছরের বেশি পুরনো এই মসজিদের বেশির ভাগ কারুকাজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পুকুর পাড়ে মসজিদের পিছনের অংশেও দেখা দিয়েছে ভাঙন। সোমবার নমাজ শেষে কালনা আঞ্জুমান সোসাইটির সভাপতি শাহনওয়াজ উদ্দিন মণ্ডল কালনার মহকুমাশাসকের কাছে মসজিদটি সংস্কারের দাবি জানান। তাঁর দাবি, বর্ষায় মসজিদের পিছনের অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান, পরিকল্পনা তৈরি করে লিখিত আকারে জানালে তিনি দ্রুত তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

Eid নমাজ Prayer Mosque মসজিদ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy