Advertisement
E-Paper

ডাকাত রুখতেই শুরু আরাধনা

৩২ পুরুষ আগে দেবীর অভয় পেয়ে শুরু এই পুজোর। দেবী প্রতিমার উচ্চতা এতখানি যে, বিসর্জনের সময়ে মন্দির লাগোয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয়।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৩৮
মূর্তি তৈরি দেখছে খুদে।—নিজস্ব চিত্র।

মূর্তি তৈরি দেখছে খুদে।—নিজস্ব চিত্র।

৩২ পুরুষ আগে দেবীর অভয় পেয়ে শুরু এই পুজোর। দেবী প্রতিমার উচ্চতা এতখানি যে, বিসর্জনের সময়ে মন্দির লাগোয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয়। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ভিড় জমান সব ধর্মের মানুষ।— ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের ‘বড় মা’ এখন এ ভাবেই পরিবারের গণ্ডী ছাড়িয়ে সর্বজনীন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, দেবী প্রতিমার উচ্চতা ১৪ হাত বা ২১ ফুট। ‘বড় মা’-র বিসর্জনের জন্য এক সময় গোটা গ্রামেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হতো। এখনও মন্দির লাগয়ো বেশ কয়েকটি বাড়িতে পুজোর আগেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। মন্দির থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরের একটি পুকুরে প্রতিমার বিসর্জন হয়। পুজোর সেবাইত অসীম ভট্টাচার্য় জানান, ভক্তদের ভিড়ে লোহার গাড়িতে চেপে ওইটুকু পথ যেতেই সময় লেগে যায় দু’ঘণ্টারও বেশি।

পুজোর শুরু হয় কী ভাবে? পুজোর সঙ্গে জড়িত তারাশঙ্কর ভট্টাচার্য ও অসিত ভট্টাচার্যরা জানান, তাঁদের পূর্বপুরুষ ভৃগুরাম ভট্টাচার্য থাকতেন কেতুগ্রামের বহুলায়। স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি চলে আসেন বড়বেলুনে। এই গ্রামের তখন নাম ছিল বিল্বপত্তন। শ্মশানের ধারে আস্তানা তৈরি করেন ভৃগুরাম। সাধক ভৃগুরামকে এলাকাছাড়া করার জন্য ঠ্যাঙাড়ে, ডাকাত বাহিনি নানা ভাবে অত্যাচার শুরু করে। সেই সময়ে অত্যাচার রুখতে ভৃগুরাম এক হাত উচ্চতার কালীমূর্তি বানিয়ে পুজো শুরু করেন। জনশ্রুতি, এক দিন পুজোর পরে সাধনা শেষ করে দেখেন, ওই এক হাত মূর্তিই ১৪ হাত হয়ে গিয়েছে। পর্ণকুটীরে কী ভাবে এমনটা সম্ভব হল, কী ভাবেই বা এই প্রতিমায় পুজো হবে— এ সব ভাবতে ভাবতেই তাঁকে দেবী অভয় দেন। এরপরেই চোদ্দো হাতের মূর্তিতে পুজো শুরু হয়।

এখানে পুজো হয় তান্ত্রিক মতে। পুজোয় হোম বা আরতি হয় না। কোজাগরী পূর্ণিমার দিন থেকে মূর্তি তৈরি হয়। রং করা শেষে দেবী প্রতিমায় গয়না পরানো হয়। পরিবারের বর্তমান সদস্য নীলমাধব ভট্টাচার্য বলেন, “পারিবারিক পুজো হলেও আজ তিনি ‘বড় মা’। শুধু বড়বেলুন নয়, আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও পুজোর সময় ভিড় জমান।’’ ‘বড় মা’য়ের টানেই মামারবাড়ি বড়বেলুন গ্রামে আসেন গৌরাঙ্গপাড়ার সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, অমিত দাঁয়েরা। তাঁদের কথায়, “কালীপুজোর সময় বড়বেলুন যেতেই হবে। এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।”

শুধু তাই নয়, পুজোকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে। ভাতার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস বন্দ্যোপধ্যায় জানান, নির্বিঘ্নে পুজো সম্পন্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশও সাহায্য করে।

kali puja dacoits
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy