Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

নামেই মডেল স্টেশন, ট্রেনের অর্ধেকটাও আঁটে না প্ল্যাটফর্মে

ট্রেন বড়। প্ল্যাটফর্ম ছোট। তা-ও একটু আধটু নয়। প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ৩৪৫ মিটার। গোটা ট্রেনকে সেখানে আঁটাতে গেলে আরও ২৪০ মিটার লম্বা করতে হবে প্ল্যাটফর্মকে।আর তেমনটা না হওয়ায় যাত্রীদের নামতে হচ্ছে রেললাইনেই। বেশ কিছুটা হেঁটে তারপর প্ল্যাটফর্মে ওঠা।

প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রেন। নিজস্ব চিত্র।

প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রেন। নিজস্ব চিত্র।

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
গুসকরা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:১৮
Share: Save:

ট্রেন বড়। প্ল্যাটফর্ম ছোট। তা-ও একটু আধটু নয়। প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ৩৪৫ মিটার। গোটা ট্রেনকে সেখানে আঁটাতে গেলে আরও ২৪০ মিটার লম্বা করতে হবে প্ল্যাটফর্মকে।

আর তেমনটা না হওয়ায় যাত্রীদের নামতে হচ্ছে রেললাইনেই। বেশ কিছুটা হেঁটে তারপর প্ল্যাটফর্মে ওঠা। এমনই হাল দশ বছর আগে ‘মডেল’ তকমা পাওয়া গুসকরা স্টেশনের। নিত্যযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত এ ভাবেই যাতায়াত করতে হয়। বারবার এ অভিযোগ জানিয়েও প্লাটফর্ম বড় করার কোনও উদ্যোগ চোখে না পড়ায় হতাশ যাত্রীরা। যদিও এ সংক্রান্ত একটা প্রস্তাব দফতরের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলকর্তারা।

পূর্ব রেলের রামপুরহাট লুপ লাইনের গুসকরা স্টেশনের এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। বিশ্বভারতী প্যাসেঞ্জার, ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস বা উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলির স্টপেজ থাকলেও ওই সমস্ত ট্রেনের পিছনের বেশ কিছু কামরার যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মের বাইরেই নামতে হয়। তাতে সবচেয়ে সমস্যা হয় বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তি এবং মহিলাদের।

গুসকরার নিলুফা বেগমের অভিযোগ, “সদ্যোজাত ছেলেকে নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে গুসকরা নেমে সমস্যায় পড়েছিলাম। ওই অবস্থায় অনেকটা পথ রেললাইনের ধার দিয়ে পাথরের মধ্যে হেঁটে আসতে খুব কষ্ট হচ্ছিল।” শুধু নিলুফা নন, নিত্যদিন এ রকম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে কমবেশি বেশিরভাগ রেলযাত্রীকেই। বিশেষত, যাঁরা না জেনে পিছনের দিকের কামরায় চাপেন।

রেলওয়ে নিত্যযাত্রী সমিতির সম্পাদক গুসকরার অশোক চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “শুধুমাত্র পাথরের মধ্যে দিয়ে হেঁটে আসা নয়, দু’নম্বর প্লাটফর্মের পাশে রয়েছে ঝোপ-জঙ্গল। বিষধর সাপেরও উৎপাত আছে। রাতের দিকে নামলে তো প্রাণ হাতে করে যেতে হয়।’’ আরও অভিযোগ, ওই প্ল্যাটফর্মেরই দক্ষিণদিকে একটি আন্ডারপাস আছে, সেখানেও কোনও সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার রেলের আধিকারিকদের কাছে দাবি জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গুসকরার বাসিন্দা তথা গুসকরা নাগরিক সুরক্ষা সমিতির অন্যতম কর্মকর্তা তপন মাজি।

একই দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে গুসকরা কনজিউমার প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনও। গুসকরা স্টেশনের প্লাটফর্ম বাড়ানো যে জরুরি তা মেনেছেন স্টেশন ম্যানেজার কার্তিকচন্দ্র কোনারও। তিনি বলেন “বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রেল দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” এ ব্যাপারে পূর্ব রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার ইউএস মণ্ডল বলেন, “এ ব্যাপারে একটা প্রস্তাব এসেছে। সেটি বিবেচনার জন্য রেল দফতরে পাঠানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Train Platform
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE