মিতালী ঘোষের বাড়িতে ফরেন্সিক দল। নিজস্ব চিত্র।
কে বা কারা খুনি— এ প্রশ্নের সন্ধানেই বুধবার রাজ্যের ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির একটি দল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের আঝাপুরে নিহত আইনজীবী মিতালী ঘোষের বাড়ি গেল। দলটি ঘরের ভিতর, বাড়ির বাইরে নানা বিষয় খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে।
দলটির নেতৃত্বে থাকা সিনিয়র সায়েন্টিস্ট চিত্রাক্ষ সরকার বলেন, ‘‘ঘরের ভিতরে ও বাইরে খুনির সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়েছে। খুনে এক জনের বেশি জড়িত। বিভিন্ন জায়গা থেকে নানা ছাপ মিলেছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে কিছু বিষয় মিলিয়ে দেখার পরেই আশা করছি, খুনির কাছে পৌঁছনো সম্ভব হবে।’’ পুলিশ জানায়, আজ, বৃহস্পতিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া যাবে।
এ দিন পৌনে ৪টে নাগাদ তিন জনের দলটি ঘটনাস্থলে আসে। দেখা যায়, বাড়িতে ঢুকে প্রথমেই মিতালীদেবীর দেহ পড়ে ছিল যেখানে, সেখান থেকে শুকনো রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পাশেই মাথার চুলের নমুনাও মেলে। সেখান থেকে দলের সদস্যেরা ছাদে ওঠেন। দলের সদস্যেরা জানান, কী ভাবে ‘খুনি’ বা ‘খুনিরা’ ঘরে ঢুকেছিল, হত্যার পরে কী ভাবে সে বা তারা বাইরে বেরিয়েছে, তা বোঝার চেষ্টা করা হয় ছাদ থেকে। মিতালীদেবীর ঘরের ভিতরে আলমারি-সহ অন্য জিনিসপত্র লন্ডভন্ড পড়ে ছিল যেখানে, সেখান থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
দলটির অনুমান, আততায়ী বাড়ি সম্বন্ধে খুবই ওয়াকিবহাল। সে মূল দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকেছে। তবে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে পাশের একটি বন্ধ বাড়ির পথ ব্যবহার করা হয়েছে। ওই বাড়ির ভিতরে ও বাইরে পাঁচিলের উচ্চতাও মাপে দলটি। পাঁচিলের গায়ে থাকা কাচের টুকরো সংগ্রহ করেন ওই দলের সদস্যেরা।
দলটি দেড় ঘণ্টা ঘটনাস্থলে ছিল। তারা চলে যাওয়ার পরে পুলিশ-কর্তারা মিতালীদেবীর ঘর আরও ভাল ভাবে পরীক্ষা করতে শুরু করেন। সেই সময়েই একটি বাক্সের দিকে পুলিশের নজর যায়। নিহতের ভাই গৌরাঙ্গবাবু-সহ অন্যদের সামনে পুলিশ ওই বাক্স ভাঙে। দেখা যায়, একটি কাপড়ের পোঁটলার ভিতরে হার, বালা, কানের দুল-সহ বেশ কিছু গয়না রয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ফরেন্সিক দলের জন্য আমরা ঘরের ভিতরে বা বাইরে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে পারিনি। ফরেন্সিক দল চলে যাওয়ার পরে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে গয়নার খোঁজ মিলেছে। আরও তদন্ত চলছে।’’
এই তদন্তের সঙ্গে জড়িত পুলিশের আধিকারিকদের দাবি, “গয়নার খোঁজ মেলায় তদন্তের অভিমুখ ঘুরে গেল। আরও কিছু নতুন তথ্য মিলেছে। আশা করা যায়, দু’-এক দিনের মধ্যেই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
তবে অভিমুখ কী ভাবে ঘুরে গেল, কী কী নতুন তথ্য, সে সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাননি তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy